প্রধান মেনু

দেখার কেউ নেই

শরনখোলায় টিআর-কাবিখা প্রকল্পে হরিলুট

আলোরকোল ডেস্ক ।।

 বাগেরহাটের শরনখোলায় কাজের বিনিময় খাদ্য সহ টাকা উন্নয়ন কর্মসুচী (টিআর- কাবিখা) প্রকল্প বাস্তবায়ন ক্ষেত্রে হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে । উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় দু-দফায় (টিআর-কাবিখার) একাধিক প্রকল্প বা¯তবায়ন করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন গুলোর চেয়ারম্যান ও মেম্বারেরা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সরকারি অর্থ হরিলুটের এক প্রকার প্রতিযেগীতা চালিয়েছেন ।

গৃহীত ওই প্রকল্প গুলোর কাজ ৩০শে জুন ২০২০ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অনেক প্রকল্প এখনো চলমান । কোথাও আবার সামান্য কাজ করে প্রকল্প সমাপ্তের পাশাপাশি কিছু প্রকল্প কাগজে-কলমে সমাপ্ত দেখানো হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে ,২০১৯-২০অর্থ বছরে ১২০টি প্যাকেজে অনুকুলে (টিআর) প্রকল্পে ৭৩লাখ ৪৭হাজার ৫২২টাকা এবং ৩২টি প্যাকেজের আওতায় কাবিখা প্রকল্পের জন্য ৩শতাধিক মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয় ত্রান দুর্যোগ মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তর । উপজেলার চারটি ইউনয়নের ওই সকল প্রকল্প গুলো বাস্থবায়ন করতে গিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যাক্তি সংশ্লিষ্ট কর্তা-ব্যাক্তিদেও সাথে যোগসাজশ করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার রাস্তার মাটি ভরাট, রাস্তা সংস্কার , বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন সহ নানা প্রকল্পের অর্থ লুট-পাট করেছন ।
উপজেলা প্রকল্প বা¯তবায়ন বিভাগের তৎকালীন কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্টদের দ্বায়সারা তদারকির কারনে সরকারের লাখ লাখ টাকা সহ বরাদ্ধ কৃত চালের অধিকাংই লোপাট করা হয়েছে ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কাবিখা প্রকল্পে উপজেলার রাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের জন্য ৯ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ হলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নান্না মিয়া বলেন ,এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই । তবে , দেখেছি বিদ্যালয় সংলগ্ন খাল খননের কিছু মাটি স্থানীয় এক ব্যাক্তি ছিটিয়ে দিয়েছেন । অপরদিকে, চাল রায়েন্দা সিনিয়র মাদ্রাসার মাঠ ভরাটের জন্য ৮মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ হয়। কিন্তু মাঠে নাম মাত্র বালু দিয়ে এক প্রকার দ্বায় সেরেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ।

এছাড়া উত্তর সোনাতলা আনছার হাওলাদারের দোকান হতে গুচ্ছ গ্রামের পুকুর পর্যুন্ত একটি রাস্তা সংস্কারর জন্য ১১মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ থাকলেও স্থানীয়রা জানান , অতিরিক্ত কাাঁদা হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য গ্রামবাসীদের নিকট থেকে কিছু চাঁদা তুলে রা¯তাটিতে সামান্য বালু ফেলে রাখা হয়েছে ।

অন্যদিকে, টিআর প্রকল্পে ৪০হাজার ৫৪৯ টাকায় রায়েন্দা ইউনিয়নের কদমতলা এলাকার জামাল গাজীর ঘর পর্যুন্ত একটি রাস্তার দুই পাশে মাটি ভরাট এবং ৬০হাজার টাকায় ঝিলবুনিয়া এলাকার তোমেছ খানের বাড়ীর কালভার্ট হইতে হারুন খানের বাড়ীর পুকুর পর্যুন্ত রাস্তা ইটসলিংয়ের কথা থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ জামাল গাজী ও মোঃ হারুন খান সহ ওই এলাকার কয়েক জন বলেন, সড়ক দুইটিতে চলতি বছরে এধরনের কোন কাজ হয়নি । তাছাড়া উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের ভাসানী কিন্ডার গার্ডেনের অনুকুলে ২০হাজার টাকা বরাদ্ধ থাকলেও এ পর্যুন্ত আদৌ কোন টাকা পাননি বলে জানান , ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইলিয়াস হোসেন ।

অপরদিকে , ৬০হাজার ৫৩২ টাকায় ধানসাগর ইউনিয়নের ছুটুখার বাজার মসজিদের পার্শের একটি রাস্তা পাইলিংয়ের নাম মাত্র কাজ করে বাকী অর্থ হজম করা হয়েছে । এমনকি একই ইউনিয়নের পহলান বাড়ী বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি (পিএসএফ) ৩০হাজারের অধিক টাকায় মেরামতের নির্দেশ থাকলেও নিদিষ্ট সময়ের পর ইতিমধ্যে তিন মাস অতিবাহিত হলেও ওই (পিএসএফটি) অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে ।

তবে, ধানসাগরের ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মইনুল হোসেন টিপু বলেন , কোন ইউনিয়নে কি কাজ হয়েছে তা জানি না । আমার ইউনিয়নে আমি ২/৩টি প্রকল্পের কাজ নিজেই নিয়ম অনুসারেই করেছি । এছাড়া ছুটুখার বাজারের ওই প্রকল্পের সম্পুর্ন টাকা এখনো পাইনি । তাই কিছু কাজ বাকি থাকলেও তা করে দেওয়া হবে ।
নাম গোপন রাখার শর্তে, উপজেলা আওয়ামীলীগের এক নেতা বলেন , উপজেলা জুড়ে (টিআর-কাবিখার অধিকাংশ প্রকল্পেই হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে ।

প্রকল্প গুলো তদারকি করা যাদের দ্বায়িত্ব ওই সকল কর্তা ব্যাক্তিরা উধাসীন থাকায় প্রকল্প বাস্থবায়নের ক্ষেত্রে হরিলুটের ঘটনা ঘটে । কর্ম ক্ষেত্রে তারা দ্বায়িত্ববান হলে সরকারের উন্নয়নের সু-ফল জনগন ভোগ করতে পারবেন । তাছাড়া র্দুনীতির লাগাম টানা সম্বভ নয় ।

প্রকল্পের নানা অনিয়মের বিষয়ে শরনখোলা উপজেলার তৎকালীন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রনজিত কুমার সরকার মুঠোফোনে বলেন, আমি এখন আর ওই উপজেলার দ্বায়িত্বে নেই। তবে, গৃহীত প্রকল্পের অধিকাংশ পরিদশর্ন করেছি । সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা যতটুকু কাজ করেছেন আমি তাদেরকে ততটুকুর বিল দিয়েছি।

এছাড়া কোন ঠিকাদার প্রকল্পের কাজ না করে থাকলে কিংম্বা অনিয়মের আশ্রয় নিলে সর্বপরি তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদ্বয় দেখবেন ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন , কোন প্রকল্পের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে ।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*