প্রধান মেনু

১২ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করেছে র‌্যাব

আলোরকোল ডেস্ক ।।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০ ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকায় ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এবার ১২ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করেছে র‌্যাব।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ফতুল্লার মাহমুদপুর পাকার মাথা এলাকায় ‘বায়তুল হুদা মাদ্রাসা’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় ১২ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে মাওলানা মো. আল আমিন নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক করা হয়।

আটক মো. আল আমিন ‘বায়তুল হুদা মাদ্রাসা’র প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ছিলেন। আটকের সময় তার মোবাইল ও অফিসের কম্পিউটার থেকে অসংখ্য পর্নো ভিডিও জব্দ করা হয়েছে।

র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন  জানায়, গত ২৭ জুন সিদ্ধিরগঞ্জের কান্দাপাড়া এলাকার অক্সফোর্ড স্কুলের ২০ ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষক আরিফের নিউজ ও ভিডিও ফুটেজ র‌্যাব-১১ এর ফেসবুক পেজে আপ করার পর তা ভাইরাল হয়। সেই ভিডিও চিত্র ও নিউজ ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকার বায়তুল হুদা মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ও তার মা দেখে।

ওই সময় ৩য় শ্রেণির ওই ছাত্রী তার মাকে বলে, ‘আমার মাদ্রাসার হুজুরকে যদি টিভিতে দেখাতো তাহলে আমার ভালো লাগতো।’ তখন মা তাকে প্রশ্ন করলে ওই ছাত্রী জানায়, ‘আমার মাদ্রাসার হুজুরও আমার সাথে বাজে কাজ করেছে।’

এরপর ওই ছাত্রীর মা ফেসবুকে ঘটনাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনকে জানায়। তারপরই শুরু হয় এ বিষয়ে র‌্যাবের তদন্ত। তদন্তে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক সব তথ্য।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘শিক্ষক মাওলানা আল-আমিন গত দেড় বছর যাবৎ বিভিন্ন সময় ২য় শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত দশের অধিক ছাত্রীদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কাউকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন করেছেন। তার মোবাইল ও অফিসের কম্পিউটারে অসংখ্য পর্নো ভিডিও পাওয়া গেছে। মূলত সে এগুলো দেখিয়েই শিশুদের উত্তেজিত করার চেষ্টা করতো বলে শিক্ষক আল-আমিন আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। আমরা তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত তথ্য উদঘাটনে কাজ করছি।’

এদিকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীদের অভিভাবকসহ স্থানীয়রা। এ সময় তারা ওই শিক্ষকের ফাঁসি চেয়ে স্লোগানও দিতে থাকে। পরে বেলা সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন, ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন, পরিদর্শক (ইন্টেলি.) আজিজুল হক।

পরে ঘটনাস্থলে এ বিষয়ে এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক কাজী শামসের উদ্দিন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ১০ জনের অধিক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকার বায়তুল হুদা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক আল-আমিনকে আটক করেছি। তার মোবাইল ও কম্পিউটার থেকে অসংখ্য পর্নো ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার অপরাধ স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হবে।’

এর আগে গত ২৮ জুন ২০ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। পরে জিজ্ঞাসাবাদে ওই শিক্ষক আপত্তিকর ছবি তুলে অসংখ্য ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করার কথা স্বীকার করেন।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*