সম্পত্তি আত্মসাত !
মঠবাড়িয়ায় বিধবাকে বিয়ে করে কশাই জাহাঙ্গীরের প্রতারণা
মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি ।।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নাজমা বেগম নামে এক বিধবাকে বিয়ে করে তার সম্পত্তি আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীর কশাই নামের এক প্রতারকের বিরুদ্ধে।
নাজমা বেগমের সরলতার সুযোগ নিয়ে তার দ্বিতীয় স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন চৌকিদার কয়েকটি দলিলের মাধ্যমে প্রথম স্বামীর রেখে যাওয়া জমি , দুইটি দোকান ঘর ও স্বর্ণালংকার আত্মসাত করে।এতে নাজমা বেগম চরমভাবে নিস্বঃ হয়ে বর্তমানে তিন সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। এমনকি প্রতারক দ্বিতীয় স্বামী জাহাঙ্গীর তাকে বসতঘর থেকে উৎখাতের জন্য শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে বলে সংবাদ সন্মেলনে অভিযোগ করেন।
প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সবুজ নগর মহল্লার কৃতি ফুটবলার মৃত মো. জামাল হোসেন বাদশার স্ত্রী নাজমা বেগম মঙ্গলবার বিকালে মঠবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার দ্বিতীয় স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন’র বিরুদ্ধে । এসময় তার প্রথম স্বামীর সন্তান জাহিদুল ইসলাম সবুৃজ ও ছেলে বৌ জান্নাতুল আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
নির্যাতিত বিধাব নাজমা বেগম তার লিখিত অভিযোগে বলেন, মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সবুজ নগর মহল্লার বাসিন্দা এ অঞ্চলের কৃতি ফুটবলার জামাল হোসেন বাপ্পা গত ১৭ বছর পূর্বে মারা যান । তার স্ত্রী নাজমা বেগম তিন সন্তান নিয়ে চরম কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করেন।
পরে স্থানীয় মৃত চান মিয়া চৌকিদারের ছেলে কশাই জাহাঙ্গীর দীর্ঘদিন ধরে ওই বিধবাকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। এক পর্যায় জাহাঙ্গীর বিধাবা নাজমার পরিবারের ভরণপোষণসহ তার মৃত প্রথম স্বামীর রেখে যাওয়া তিন সন্তান মানুষ করে তাদের বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিতে থাকে।
বিধাব নাজমা তিন সন্তান ও নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে জাহাঙ্গীরকে বিয়ে করতে বাধ্য হন। এরপর নাজমার মৃত স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তি আত্মসাতের ফন্দি আঁটে জাহাঙ্গীর । ভুল বুঝিয়ে কৌশলে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের মৃত স্বামীর দুইটি দোকান ঘর বিক্রি করে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় সে।
এছাড়া অপকৌশলে জাহাঙ্গীর ওই বিধবার মেয়ে বিয়ে ও পাকা বাড়ি করে দেওয়ার নামে সবুজনগর মহল্লায় ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ৯ শতাংশ জমি লিখে নেয়। সেই সাথে নাজমার প্রায় দুই লাখ টাকার র্স্বণালংকারও হাতিয়ে নেয় প্রতারক জাহাঙ্গীর।
এছাড়া নাজমার ছেলে জাহিদুল ইসলাম এর চিকিৎসা করানোর নামে এক শতাংশ জমি কবলা দলিল করতে গিয়ে প্রতারণা করে ৬ শতাংশ লিখে নেয়।
এমনকি ওই জমির দলিল উপজেলা সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে বসে না করে শহরের একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর অফিসে বসে করে নেয়।
এদিকে দ্বিতীয় স্বামীর এমন প্রতরণার বিচার চেয়ে ভূক্তভোগি বিধবা নাজমা বেগম সহকারি পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন।
পুলিশ সুপার বিষয়টি সুরহার জন্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেন। কিন্তু এ ঘটনার ৯ মাস অতিবাহিত হলেও প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার ওই বিধবা কোন প্রতিকার পাননি।
অসহায় বিধবা নাজমা বেগম বলেন, তাকে ও তার সন্তানদের বাড়ি থেকে উৎখাতের জন্য নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে তার দ্বিতীয় স্বামী জাহাঙ্গীর।
বর্তমানে দ্বিতীয় স্বামী জাহাঙ্গীর আমাকে ও আমার সন্তানদের বাড়ি ছাড়া করার হুমকী দিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আশরাফুর রহমান বলেন, লিখিত আবেদন পেয়েছি। ব্যস্ত থাকার কারণে বিষয়টি সুরহা করা সম্ভব হয়নি।
সহকারি পুলিশ সুপার মোস্তফা স্বপন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লিখিত আবেদন পেয়ে স্বামী ও স্ত্রী দুইজনকে নোটিশ করে ডেকে আনা হয়েছিল। তারা দুই জনই বিষয়টি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে ফয়সালার জন্য একমত হন। বিষয়টি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে মিমাংসার জন্য রয়েছে।