প্রধান মেনু

সরকারী সুফল থেকে বঞ্চিত গবাদীপশুর খামারীরা

শরণখোলায় কৃত্রিম প্রজননের বীজ নিয়ে অর্থ বানিজ্য !

এমাদুল হক (শামীম) ।।

বাগেরহাটের শরণখোলায় কৃত্রিম প্রজননের সরকারী (সিমেন) বীজ নিয়ে বাণিজ্য চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রাণী-সম্পদ দপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা- কর্মচারীদের যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খামারীদের এক প্রকার জিম্মি করে এ বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছেন। যার ফলে প্রাণী সম্পদ বিভাগে । এছাড়া বিভিন্ন সময়ে খামারীদের প্রশিক্ষণ তালিকায় যাদের নাম অর্ন্তভ‚ক্ত করা হয় তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত।

এমনকি সরকারী সরবরাহকৃত বিনামুল্যের ঔষধ ও সঠিকভাবে না পাওয়ার অভিযোগসহ টাকার বিনিময়ে সেবা নিতে হচ্ছে অনেকের।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ২১ হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারী খামারী রয়েছে। এদের তত্তাবধায়নে প্রায় ২০ হাজার গবাদী পশু (গরু), ১০ হাজার ছাগল, ১ হাজার মহিষ, ৬২০টি ভেড়া রয়েছে। ওই সকল খামারীদের মাধ্যমে প্রাণি-সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি করে স্থানীয় জনসাধারণের মাংস ও দুধের চাহিদা মেটাতে সল্প মুল্যে কৃত্রিম প্রজননের বীজ সরবরাহ করেন সরকার।

খামারীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি নাম মাত্র মূল্যে কৃত্রিম প্রজনন (সিমেন) বীজ সরবরাহের জন্য সম্প্রতি প্রজনন প্রকল্পের আওতায় শরণখোলা উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ৪জন টেকনিশিয়ানকে ইতোমধ্যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সরকারী ছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানীর নামে প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি নিজেদের প্রাণী চিকিৎসক (ডাক্তার) পরিচয় দিয়ে খামারীদের কাছ থেকে প্রজনন সহ প্রাণী চিকিৎসার নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

অপরদিকে, প্রজনন বীজ সরবরাহের জন্য সরকার নির্ধারিত ৩০ টাকা গ্রহণের নিয়ম থাকলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ানদের পাশাপাশি স্থানীয় হাতুড়ে চিকিৎসকরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে খামারীদের ভুল বুঝিয়ে প্রতিটি প্রজননের অনুকুলে ১৫’শ থেকে ২ হাজার কোন কোন ক্ষেত্রে যাতায়াত খরচ মিলিয়ে দুই থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতাচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানীর নামে কেউ কেউ ৩/৪ হাজার টাকাও গ্রহণ করছেন।

তবে, সরকারী বীজ পেতে এ ধরণের হয়রানিই শেষ নয়, প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র কিনতেও হচ্ছে বাজার থেকে। এ বিষয়ে খুড়িয়াখালী গ্রামের খামারী মতিয়ার রহমান, তাফালবাড়ি এলাকার খামারী সেলিম হাওলাদার, রাজাপুর এলাকার খামারী সবুজ মিয়া সহ অনেকে বলেন, প্রাণী সম্পদ বিভাগে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের বিষয়ে তাদের তেমন কোন ধারণা নেই।

গবাদী পশুর চিকিৎসার ক্ষেত্রে তাদের তেমন সহযোগিতা পাওয়া যায় না। প্রজনন বীজসহ চিকিৎসার জন্য টেকনিশিয়ানদের স্বরণাপন্ন হলে তাদের চাহিদামত টাকা না দিলে সরকারী সেবা মেলে না। এছাড়া প্রাণী সম্পদ বিভাগে সরকারের নানামূখী সেবার বিষয়ে খামারীদের অবগত করতে হলে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সভা, সেমিনারসহ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।

তাহলে সরকারের নানামূখী উদ্যোগের সুফল ভোগ করতে পারবে গ্রামাঞ্চলের খামারীরা। এ বিষয়ে উপজেলা পানি সম্পদ দপ্তরের টেকনিশিয়ান রতন হালদার ও শাহ আলম মিয়া বলেন, প্রজনন বীজ সরবরাহ সহ চিকিৎসার ক্ষেত্রে খামারীদের কোন চাপ প্রয়োগ করা হয় না। খুশি হয়ে যে যা দেয় আমরা তা গ্রহণ করি। উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ভেটেরিনারী সার্জন ডাঃ মোঃ আলাউদ্দিন মাসুদ জানান, প্রজনন বীজ সরবরাহের ক্ষেত্রে ২/৩ হাজার টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নাই।

একজন খামারীর কাছ থেকে যাতায়াত সহ সর্বোচ্চ ৫/৬ ’শ টাকা নিতে পারবেন টেকনিশিয়ানরা। এর বাহিরে অতিরিক্ত টাকা কেউ গ্রহণ করলে তার বিরুদ্ধে বিধিগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া খামারীদের অন্য সব অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। তবে, জনবল সংকটের কারণে সব সময় খামারীদের সব দাবী পূরণ করা সম্ভব হয় না।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*