প্রধান মেনু

ঈদকে টার্গেট করে চোরা শিকারীরা বেপরোয়া

সুন্দরবনে হরিণের অস্তিত্ব হুমকির মুখে

 

সাবেরা ঝর্না ।।

ঈদকে টার্গেট করে চোরা শিকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পর্যটকদের আকৃষ্টকারী মায়াবী চিত্রল হরিণের অস্থিত্ব দিন দিন হুমকির মুখে পরছে। প্রশাসনের কড়া নজরদারীর পরেও গোপনে বা মাছের পাস নিয়ে বনে ডুকে হরিণ শিকারে মেতে উঠে ।যার কারনে চোরা শিকারীদের কবলে পরে মারা পরছে অসংখ্য হরিণ।

সম্প্রতি একবারে ৭/৮টি হরিণ শিকার করে প্রায় ২০০ কেজি মাংশ পাচারের সময় ধরাপরায় সচেতন মহলকে অবাক করে তোলে। পূর্ব সুন্দরবন ও সংলগ্ন এলাকায় বনবিভাগ ও কোষ্টগার্ড গত জানুয়ারী মাস থেকে ২৭ শে মে পর্যন্ত ৮ টি অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৭৮ কেজি হরিণের মাংশ,একটি জবাই করা হরিণ ৫টি চামড়া ৪ টি মাথা,৩টি নৌকা, ১টি ট্রলার,৪ জন চোরা শিকারী ও কয়েক হাজার ফিট হরিণ ধরার ফাঁদ উদ্ধার করে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাযায়, ১ লাখ ৩৩ হাজার ২৪৭ হেক্টর আয়তন বিশিষ্ট পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ পর্যটক স্পট হিসাবে খ্যাত বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী কটকা,কচিখালী, দুবলারচরসহ বিভিন্ন স্পটে সকাল বিকাল হরিণের পাল দেখা যায়। যা প্রতি বছর প্রায় অর্ধ লাখ পর্যটকদের অকৃষ্ট করে। কোষাগরে রাজশ্ব জমা হয় লাখ লাখ টাকা। এক সময় শীতের মৌসুমে বেশি হরিণ শিকার হতো চোরা শিকারীদের হাতে। এখন বলতে গেলে সারা বছরই কম বেশি শিকার হচ্ছে হরিণ। মাঝে মাঝে পাচারের সময় প্রশাসনের হাতে ছোট বা বড় চালান ধরাও পরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে।

সুন্দরবনের শরণরখালা রেঞ্জ সংলগ্ন বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী পাথরঘাটাএকটি হরিণ শিকারী চক্র রয়েছে।তারা সু যোগ বুঝে নানা কৌশলে সুন্দরবনে ডুকে হরিণ শিকার করে আসছে। গত ১৮ মে ভোর রাত সাড়ে তিনটায় বড় এক চালান মাংশ নিয়ে পাথরঘাটা উপজেলার চর লাঠিমারা বনফুল আবাসন সংলগ্ন একটি খালে পৌছলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বনবিভাগ প্রায় ২০০ কেজি হরিণের মাংশ ২টি চামড়া, ২টি মাথা, ২ বস্তা হরিণ ধরার ফাঁদ ও ইঞ্জিলচালিত ১টি ট্রলার জব্ধ করেন। এ সময় কোষ্টগার্ড ও পুলিশ উপস্থিত ছিল। শরণখোলা ও মোংলাতেও হরিণ শিকারী রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায় এ শিকারীদের মাধ্যমে মাংস ক্রয় করে বিভিন্ন দপ্তরের অসাধু কর্মকর্তাদের খুশি করতে বা চাকরী পেতে পৌছে দেয় হরিণের মাংস তাদের বাসায় ।

জানা যায়, গত ৩ মার্চ সুন্দরবনে হরিণ শিকারের প্রস্থুতি কালে ১৫ শত ফিট হরিণ ধরার ফাদসহ তিন শিকারীকে বন বিভাগ আটক করে। তারা হচ্ছে শরণখোলা উপজেলার তাফালবাড়ি এলাকার , করিম হাওলাদারের ছেলে মান্নান হাং , হালিম মুন্সীর ছেলে নাসির মুন্সী ও পাথরঘাটা এলাকার নাজেম গোলদারের ছেলে জামাল। গত ৭ ফেব্রæয়ারী ভোর ৪টার দিকে শরণখোলা রেঞ্জের পক্ষিদিয়ার চর এলাকায় পাথরঘাটা কোষ্টগার্ডের অভিযানকালে হরিণ শিকারীরা বনের মধ্যে পালিয়ে যায়।

এসময় তল্লাশী চালিয়ে ৪০ কেজি হরিণের মাংশ মাথা ২টি চামড়া উদ্ধার করে। গত ৩১ জানুয়ারী ভোরে সুন্দরবনের কাগাখাল এলাকায় বনরক্ষীদের অভিযানকালে হরিণ শিকারীদের দাওয়া করলে বনে পালিয়ে যায়। পরে তল্লাশি চালিয়ে একটি জবাই করা হরিণ দুইশ হাত হরিণ ধরার ফাঁদ একটি নৌকা উদ্ধার করে। এসময় পালিয়ে যাওয়, এখলাস হাং ইলিয়াচ হাং ও ইয়াছিন হাং এর বিরুদ্ধে বনবিভাগ মামলা দায়ের করেন।

এরা মাছের পাস নিয়ে বনে ডুকছিল বলে সূত্র জানায়। গত ২০ জানুয়ারী কোষ্টগার্ডে হারবাড়িয়া সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ৮ কেজি হরিণের মাংশ ১টি মাথা ও ১টি চামড়া উদ্ধার করে। গত ৭ জানুয়ারী বনের পশুর নদীর চিলা এলাকা থেকে বনরক্ষীরা অভিযান চালিয়ে ৩০ কেজি হরিণের মাংশ একটি নৌকা উদ্ধার করে। গত ৩ জানুয়ারী শরণখোলা রেঞ্জের চরখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে বনরক্ষীরা ১৪শত ফুট হরিণ ধরা ফাঁদ উদ্ধার করে। সর্ব শেষ গত ২৭ মে শরণখোলা ষ্টেশনের বনরক্ষীরা তেতুলবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮ কেজি হরিণরে মাংশ ৫০ ফুট হরিণ ধরার ফাদ ও ১ টি নৌকা উদ্ধার ও বাদশা মিয়া নামের এক শিকারীকে আটক করে। তার বাড়ি শরণখোলার উত্তার তাফালবাড়ি গ্রামে।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন হরিণ শিকার রোধে টহল জোরদার করা হয়েছে। ঈদের সময় ছুটি সিমিত করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে রেড এ্যালার্ড। এব্যপারে বনবিভাগের কর্মকর্তা ও বনরক্ষীরা সতার্ক রয়েছে। হরিণ শিকার রোধে সব মহলের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*