প্রধান মেনু

সুন্দরবনের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ ছিল ফলে প্রশাসনিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছিল

সুন্দরবনের ৫৬টি পয়েন্টে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো স্থাপনের কাজ শুরু

আলোরকোল ডেস্ক ।।

ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ  শুরুহলেই  উপকূল বাসীদের বাচাবে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে সুন্দরবনের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। এসব হুমকি থেকে রক্ষার জন্য পুরো সুন্দরবনকে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।

ছবি-বাবুল দাস

খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার প্রায় ছয় লাখ এক হাজার ৭০০ হেক্টর এলাকা নিয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবন। এর মধ্যে এক লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর বনাঞ্চলকে ১৯৯৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করে ইউনেসকো।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকৃতির ঢাল হিসেবে পরিচিত সুন্দরবনকে রক্ষায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পুরো সুন্দরবন কখনোই টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় ছিল না। যেটুকু ছিল, তাও ভেঙে পড়ে ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে। এরপর ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন থেকে বনের দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ প্রায় অকেজো হয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে চলছিল সুন্দরবনের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর আঘাতে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব বোঝা গেছে।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলের অর্থায়নে ‘সুন্দরবনে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুনস্থাপন প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প গত অর্থবছরে অনুমোদন পেয়েছে। তিন কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের আওতায় সুন্দরবনের ৫৬টি পয়েন্টে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে ২৮টি, পশ্চিম বন বিভাগে ২৭টি এবং খুলনা বন সংরক্ষকের অফিসে একটি। প্রকল্পের আওতায় সুন্দরবনের গভীরে ৫০টি ভিএইচএফ টাওয়ার ও ছয়টি র‌্যাপোর্টার টাওয়ার নির্মিত হবে। এ ছাড়া ৫০টি ভিএইচএফ সেট, ছয়টি র‌্যাপোর্টার সেট, ৫৬টি সোলার ব্যাটারি ও ১০০টি ওয়াকিটকি সেট কেনা হবে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জানান. নানা কারণে সুন্দরবনের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। ফলে প্রশাসনিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছিল। এই টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সক্রিয় করতে নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সুন্দরবনের দুর্গম এলাকায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তথ্য আদান-প্রদান ও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ সহজ হবে বলে জানান বনরক্ষী শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা বনের গভীরে অনেক দুর্গম এলাকায় দায়িত্ব পালন করি। সেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক থাকে না। এ জন্য তাত্ক্ষণিকভাবে কারো সঙ্গে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ওয়্যারলেস সেটের মাধ্যমে সবার সঙ্গে যুক্ত থাকা যাবে।’

উপকূলীয় পরিবেশ সুরক্ষায় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, প্রকল্পটির যথাযথ বাস্তবায়নে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে। ইকো ট্যুরিজম ও সুন্দরবনের অভ্যন্তরে চিত্তবিনোদনের সুযোগের সম্প্রসারণ ঘটবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অপরাধ দমনে টহল কার্যক্রম জোরদার করা যাবে।

নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ ইন বাংলাদেশের (এনসিসিবি) রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান অপু বলেন, প্রকল্পটি অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কারণ এর আগে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*