প্রধান মেনু

অসাধু বন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায়

সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মৎস্য অভয়াশ্রম এলাকায় মাছ শিকার এখন ওপেন সিক্রেট

 

আলোরকোল ডেস্ক ।।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে বড়শির পাস নিয়ে মৎস্য প্রজনন জোনের অভয়াশ্রম এলাকায় অসাধু বন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় অবৈধ ভাবে বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ শিকারের ঘটনা এখন ওপেন সিক্রেট ।
এতে ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ ও রেনু পোনা। জিরো ফাঁসের জাল দিয়ে প্রকাশ্যে মাছ শিকার এবং শরণখোলা রেঞ্জ অফিসের সামনে ডাকের মাধ্যমে প্রতিদিন বিক্রী করা হয় লাখ লাখ টাকার মাছ ।

সুন্দরবন ঘুরে দেখা গেছে, জেলেরা চরপাটা (চরঘেরা), খরচি, খাল পাটা, ডাং জাল, আটোন জাল, বাধা জাল, নেট সাবার ও খুটা জাল পেতে মৎস্য প্রজনন এলাকার ছোট বড় মাছ ধ্বংস করে দিচ্ছে। গোটা রেঞ্জের নদী ও ছোট-বড় খালে মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা (অভরোধ) থাকলেও ব্যবসায়ীরা তা মানছে না। বনবিভাগের কতিপয় অসাধু বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ম্যানেজ করে শরণখোলা ও পাথরঘাটা উপজেলার চিহ্নিত কিছু মাছ ব্যবসায়ীরা এ অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।

শরণখোলা রেঞ্জের ৭৮% এলাকাকে বনবিভাগ মৎস্য অভয়াশ্রম ঘোষনা করেছে। ফলে বনবিভাগের কিছু কর্মকর্তা, কর্মচারী ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা এসব অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন।
নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা জানান, মৎস্য অভয়াশ্রম খ্যাত কটকা ও বেতমোর, হুমরা, গাবের খাল, কালিদিয়া, ছিটা কটকা, বড় কটকা, কচিখালী, কোকিলমনি, ছাপড়াখালী এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আহরন করছে খুলনা মহনগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সাধারন সম্পাদক ও শরণখোলা সুন্দরবন মৎস্য ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পলাশ মাহমুদ, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার জাকির হোসেন তালুকদার, পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা  স্লুইজের হালিম খাঁ সহ আরো অনেকে ।
চান্দেশ্বর টহলফাঁড়ি অফিসের আওতাধীন অভয়াশ্রম ও সুপতি এলাকায় মাছ আহরন করে থাকে চরদোয়ানী এলাকার মাফুল মেম্বর। সিজন চুক্তিতে জাল প্রতি সংশ্লিষ্ট স্টেশন ও টহলফাঁড়িতে ব্যসায়ীদের দিতে হয় ১৫ হাজার টাকা। এছাড়া, প্রতি গোনে জালের প্রকার ভেদে দিতে হয় ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা ও মাছ।

কচিখালী অফিস সংলগ্ন খাল, কটকা, দুধরাজ খালসহ বিভিন্ন খাল ও নদ এলাকায় ২৫ থেকে ৩০টি বাধা জাল পাতা হয়। এদেরকেও একই রেটে টাকা পরিশোধ করতে হয় কটকা ও কচিখালী টহলফাড়ির বনরক্ষীদের।
অন্যদিকে, শরণখোলা স্টেশন আওতাধীন ভোলা নদীতে ভাসান জাল, নেট সাবার, খরচি ও মাছের রেনু-পোনা ধ্বংসকারী চরপাটা (চরঘেরা) জাল পেতে ইলিশের পোনা ও বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ ধরে থাকেন শরণখোলার সেনাতলা গ্রামের আলম, কালাম, ফুলমিয়া শিকদার, হবিব ফকির, মাহাবুব ও খলিলুর রহমানসহ অন্যান্য জেলেরা। এদের কাছ থেকে জাল ও গোন প্রতি আদায় করা হয় ৫ হাজার টাকা করে। এরাও বড়শির পাস নিয়ে এসব অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।

এ বিষয়ে মৎস্য ব্যবসায়ী পলাশ মাহমুদ বলেন, তিনি রাজস্ব দিয়ে সুন্দরবনে ব্যবসা করি। তবে ছাপড়াখালী ও কটকা অভায়শ্রমে তাহার জেলেরা মাছ শিকার করে না।
ভান্ডারীয়া উপজেলার মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলে জাকির হোসেন তালুকদার বলেন, তিনি মাঝে মাঝে কটকা মৎস্য অভায়শ্রামের মাছ শিকার করি, তবে ছাপড়াখালী অভায়শ্রম পলাশ মাহমুদের দখলে। তিনি সেখানে মাছ শিকার করেন।
এ বিষয়ে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, অভয়াশ্রমে মাছ ধরা নিষেধ তবে কেউ যদি চুরি করে ধরে থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো.বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবনের অভয়াশ্রমে সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। যদি কেউ ধরে তাহলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*