প্রধান মেনু

অসাধু বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ম্যানেজ করে

সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের অভয়াশ্রমে মাছ শিকারের অভিযোগ

আলোরকোল ডেস্ক ।।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মৎস্য প্রজনন জোনের অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ ধরার অভিযোগ উঠেছে।

এক্ষেত্রে জেলেরা চরপাটা (চরঘেরা), ভাসনা, খরচি, নেট সাবার ও খুটা জাল পেতে মৎস্য প্রজনন এলাকার ছোট বড় মাছ ধ্বংস করে দিচ্ছে। গোটা রেঞ্জের নদী ও ছোট-বড় খালে দু’মাস মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা (অভরোধ) থাকলেও সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা তা মানছে না।

বনবিভাগের কতিপয় অসাধু বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ম্যানেজ করে শরণখোলা ও পাথরঘাটা উপজেলার চিহ্নিত কিছু মাছ ব্যবসায়ীরা এ অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।
জানা যায়, শরণখোলা রেঞ্জের অধিকাংশ এলাকাকে বনবিভাগ মৎস্য অভয়াশ্রম ঘোষনা করেছে। এতে জীবন জীবিকার জন্য জেলেরা যেমন বিপাকে পড়েছেন। তেমনি, অসাধু বনকর্মীদের অবৈধ আয়ের উৎস বন্ধ হয়েছে।

একারনে বনবিভাগের কতিপয় অসৎ বনকর্মী ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা এসব অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন। নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা জানান, মৎস্য অভয়াশ্রম খ্যাত কটকা ও তার অফিস আওতাধীন ছোট-বড় খাল, কচিখালী ও তার আশেপাশের খাল, শেলা, কোকিলমনি, টিয়ারচর, ছাপড়াখালীসহ অন্যান্য এলাকায় ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ আহরন করছে শরণখোলা উপজেলার চালিতাবুনিয়ার চাঁন মিয়া ওরফে চান্দু, এবং গাবতলার, তাফালবাড়ি ও রাজাপুর কয়েকজন চিহিৃত মৎস্য ব্যবসায়ী এবং পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা স্লুইজের হালিম খাঁসহ অন্যান্যরা।

চান্দেশ্বর টহলফাঁড়ি অফিসের আওতাধীন অভয়াশ্রম ও সুপতি এলাকায় মাছ আহরন করে থাকে চরদোয়ানী এলাকার মাফুল মেম্বর। সিজন চুক্তিতে জাল প্রতি সংশ্লিষ্ট স্টেশন ও টহলফাঁড়িতে ব্যসায়ীদের দিতে হয় ১৫ হাজার টাকা। এছাড়া, প্রতি গোনে জাল প্রতি ৫ হাজার টাকা, ৫টি ইলিশ ও অন্যান্য মাছ। কচিখালী অফিস সংলগ্ন খাল, কটকা, বন্ধুর খালসহ বিভিন্ন খাল ও শেলা এলাকায় ২৫ থেকে ৩০ টি খুটা জাল পাতা হয়। এদেরকেও একই রেটে টাকা পরিশোধ করতে হয়।

সুত্র আরো জানায়, শরণখোলা স্টেশন আওতাধীন ভোলা নদীতে ভাসান জাল, নেট সাবার, খরচি ও মাছের রেনু-পোনা ধ্বংসকারী চরপাটা (চরঘেরা) জাল পেতে ইলিশ ও বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ ধরে থাকেন শরণখোলার সেনাতলা গ্রামের আলম, মিজানুর রহমান, রাসেল, কালাম, মাহাবুব ও খলিলুর রহমানসহ অন্যান্য জেলেরা। এদের কাছ থেকে জাল ও গোন প্রতি আদায় করা হয় ৫ হাজার টাকা করে। এরা বড়শি পাস নিয়ে এসব অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।
বন সংলগ্ন শরণখোলার একাধিক ব্যক্তি জানান, ১ জুলাই থেকে ৩০ আগষ্ট পূর্ব সুন্দরবনে মাছ আহরন নিষিদ্ধ (অবরোধ) ঘোষনা করা হলেও কেউ মানছেন না এ আইন। অররোধের প্রথম দিকে কোকিলমনি এলাকায় শরণখোলার তাফালবাড়ির জনৈক ব্যবসায়ীর এরকম একটি অবৈধ ট্রলার মাছ শিকারকালে কোষ্টগার্ড আটক করে বনবিভাগের হস্তান্তর করেন। কিন্তু তদবিরের জোরে এবং অজ্ঞাত কারনে নাম মাত্র জরিমানা দেখিয়ে বনবিভাগ ট্রলারটি ছেড়ে দেন।

এ বিষয়ে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন শরণখোলা রেঞ্জ এলাকার অভয়াশ্রমে মাছ শিকারের কথা অস্বীকার করেন। ডিএফও (পূর্ব বিভাগ) মাহামুদুল ইসলাম জানান, সুন্দরবনের অভয়াশ্রমে সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। যদি কেউ ধরে তাহলে তদন্ত করে যারা যারা জড়িত তাদের সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(সংবাদটি শেয়ার করুন )






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*