প্রধান মেনু

সারাদেশে ৩০০টি কলেজের মধ্যে মাত্র ৮টির আত্মীকরণের কাজ শুরু

আলোরকোল ডেস্ক ।।

সারাদেশে ৩০০টি কলেজকে জাতীয়করণের আদেশ জারি হয় ২০১৬ সালের আগস্টে। এর আড়াই বছর পর ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে কলেজগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্মীকরণের জন্য কাগজপত্র জমা নেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তারও আটমাস পর শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্মীকরণে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শুরু করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে অবশ্য মাউশি ৩০০টি কলেজের মধ্যে মাত্র ৮৬টির নথিপত্র যাচাইয়ের কাজ শেষ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। মাউশি যেখানে শেষ করেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেখান থেকেই কাজ শুরু করেছে।

শনিবার(২৪ আগস্ট) মাউশির সম্মেলন কক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) মাহমুদ-উল-হকের সভাপতিত্বে বৈঠকে সেই ৩০০টি কলেজ থেকে মাত্র আটটি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের নথিপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। দিনভর এই বৈঠকে আটটি কলেজের নথি যাচাই শেষ হলেও ফের মন্ত্রণালয়ে আরেকদফা তল্লাশি চালানো হবে বলে সূত্র জানিয়েছে। তারপর নথিগুলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তবে কবে নাগাদ পাঠানো হবে তার দিনক্ষণ জানা যায়নি।

যে আটটি কলেজের নথিপত্র প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রামের চুনতি ও সীতাকুণ্ড কলেজ, কুমিল্লার কালিকাপুরের আব্দুল মতিন খসরু কলেজ, সিলেটের বালাগঞ্জ কলেজ, রংপুরের গঙ্গাচড়া কলেজ, খুলনার ফুলতলার শাহপুর কলেজ এবং রাজশাহীর বাঘা ও মোহনপুর কলেজ।

বৈঠকে এসব কলেজের অধ্যক্ষদেরও ডেকে আনা হয়। এর মধ্যে যে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীর কাগজে সমস্যা ধরা পড়েছে, তার জবাব অধ্যক্ষের কাছ থেকে নেয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রথম দিনের বাছাইয়ে বালাগঞ্জ কলেজের সাতজনের সমস্যা ধরা পড়েছে। এর মধ্যে দুইজন শিক্ষকও রয়েছেন। বাকি কলেজগুলোর মধ্যে কোনোটিতে শতাধিক জনবল, কোনোটিতে একশ ছুঁই ছুঁই  জনবল। কোনো কলেজে শিক্ষক নিয়োগে সমস্যাতো অন্য কলেজে কাম্য যোগ্যতার অভাব ধরা পড়েছে।

বৈঠকে অংশ নেয়া একজন কর্মকর্তা বলেন, যে আটটি কলেজ নিয়ে শনিবার বৈঠক হয়েছে, সেগুলোর রেজুলেশন করা হবে। একইসঙ্গে এগুলো আরো একবার যাচাই করা হবে। তারপর জনপ্রশাসনে পাঠানো হবে।

কচ্ছপগতির এই কাজ কবে শেষ হবে এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি হওয়া কলেজগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্মীকরণের কাজ চলছে। এই কাজ এতোটাই কঠিন যে প্রতিটি কাগজ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হয়। সংশ্লিষ্ট কারো কাগজপত্রে ঘাটতি থাকলে জনপ্রশাসনে আটকে যাবে। ফলে ওই শিক্ষক কিংবা কর্মচারী আত্মীকৃত হতে পারবেন না। এজন্য নথিগুলো দেখতে সময় লাগছে।
মন্ত্রণালয় নিজেদের গাফিলাতির কথা স্বীকার না করে অনেকটা কলেজের ওপরই দায় চাপিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখার আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু কলেজের দিক থেকে সমস্যা হচ্ছে। নিয়োগ, এমপিওসহ নানা কাগজ দিতে তারা দেরি করছে। সব কাগজ পাওয়ার পরও বহু প্রক্রিয়া শেষ করতে হয়।’

সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষক-কর্মচারী আত্মীকরণে যেসব তথ্যগুলো দেখা হচ্ছে সেগুলো হলো- আত্মীকরণের প্রস্তাবিত পদটি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্যাটার্নভুক্ত কি না? প্যাটার্নভুক্তির সমর্থনে মন্ত্রণালয়ের প্রত্যয়ন ও পরিপত্র, প্রস্তাবিত জনবলকে প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা জারির আগে নিয়োগ দেয়া হয়েছে কি না? বিধি মোতাবেক সরকারি প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সকলের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে কি না, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে কি না? প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিলো কি না অর্থাৎ নিয়োগ প্রক্রিয়াটি যথাযথ কি না- এ বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট প্রত্যয়ন রয়েছে কি না, শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া যথাযথ ছিল কি না তা যাচাই করা। এছাড়া সকল পরীক্ষার সনদ, নিয়োগের সিদ্ধান্ত সন্বলিত রেজুলেশন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নিয়োগ কমিটি গঠনের রেজুলেশন, ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়নের কপি, নিয়োগ পরীক্ষার টেবুলেশন শিট, নিয়োগ অনুমোদন সংক্রান্ত রেজুলেশন, নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র, এমপিও শিট, প্রদর্শক ও কর্মচারীদের ক্ষেত্রে সনদ এবং নম্বরপত্র ও অধিভুক্তির সমর্থনে পত্র/পাঠদানের অনুমতিপত্রও যাচাই-বাছাই করা হয়।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*