প্রধান মেনু

এক্স-রে ও প্যাথলজী ল্যাব বন্ধ, রোগীদের দুর্ভোগ চরমে

শরণখোলায় দেড় লাখ মানুষের জন্য মাত্র ২ জন ডাক্তার

সাবেরা ঝর্ণা ।।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে এ হাসপাতালে ১০ জন ডাক্তারের মধ্যে আছে মাত্র ২ জন।

দীর্ঘ ১১বছর ধরে এক্স-রে মেশিন বিকল ও ল্যাব টেকনিশিয়ান না থাকায় ৭/৮ বছর ধরে পরিক্ষাগার বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন পদে হাসপাতালের ৫৬ জনের পদ শূন্য সহ নানা সমস্যা বিরাজ করায় চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, জুনিয়ার কনসাটেন্ট (মেডিসিন), জনিয়ার কনসাটেন্ট (শৈল্য), জুনিয়ার কনসাটেন্ট (গাইনী), জুনিয়ার কনসাটেন্ট এ্যানেস্থেসিয়া, ডেন্টাল সার্জন ও হোমিও প্যাথিক সহ ৮ জন ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে।

এছাড়া নার্সিং সুপার-ভাইজর, সিনিয়র স্টাফ নার্স ৪ জন, ফার্মসিস্টি ২ জন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাবরেটরী), স্বাস্থ্য পরিদর্শক ২ জন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৫ জন, স্বাস্থ্য সহকারী ১৪ জনের পদ সহ ৫৬ জনরে পদ শূন্য রয়েছে। ল্যাব টেকনিশিয়ান না থাকায় ৭/৮ বছর ধরে পরিক্ষাগার বন্ধ রয়েছে। জুনিয়ার কনসাটেন্ট এ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তার না থাকায় অপারেশন থিয়েটার প্রায় বন্ধের পথে।

পাশাপাশি ১১ বছর ধরে অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে থাকায় রোগীদের দুর্ভোগ এখন চরমে। এ সমস্যার কারনে গরীব রোগীদের অধিক টাকা খরচ করে কোন পরিক্ষা বা এক্সেরে কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এ হাসপাতালে উন্নত মানের একটি জেনারেটর থাকলেও ফুয়েলের অভাবে অনেক বছর ধরে অচল রয়েছে। এ সমস্যার কারনে বিদ্যুৎ চলে গেলে দুটি ভবনের ওয়ার্ডে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এলাকা বাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি ৫০ শয্যা হাসপাতালে উন্নিত করে গত ২০১২ সালের ১৩ মার্চ সংসদ সদস্য ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন ভবনটির আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বাধন করেন।

উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চল থেকে প্রতিদিন বহির বিভাগে প্রায় ১৫০/২০০ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। ডাক্তারের অভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে চিকিৎসকের সাক্ষাৎ নিতে হয়। আবার অনেক রোগী ধৈর্য্যহারা হয়ে বাড়ি ফিরে যায়। গ্রাম্য কোয়াক ডাক্তারের স্বরনাপন্য হয়ে চিকিৎসা নিয়ে নানা জটিলতায় পরে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জামাল মিয়া (শোভন) জানায়, প্রতিদিন এ হাসপাতালে উপজেলা বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৫০/২০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। এছাড়া হাসপাতালে অর্ধশতাধীক রোগী সব সময় ভর্তি থাকে। এ সব রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া ২ জন ডাক্তারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে।

ডাক্তার সংকটের কারনে দিন রাত সমান ভাবে কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু ডাক্তার আসলেও বেশি দিন থাকতে চায় না, কারন স্থানীয় কিছু সমস্যার কারনে।

ডাক্তার সংকটের সমস্যা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। হাসপাতালে ভিতর থেকে সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য গেইট থাকায় পরিবেশ দূষন ও নিরাপত্তা সহ ভিবিন্ন সমস্যা হচ্ছে। এটি বন্ধ হওয়া দরকার। জরুরী ভিত্তিতে ডিজিটাল এ-ক্সে মেশিন দরকার।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডাঃ জি.কে.এম সামসুজ্জামান বলেন, শরণখোলার স্বস্থ্য কমপ্লেক্স এর নানা সমস্যা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করা হয়েছে। ৩৯ বিসিএস থেকে নিয়োগ দিলে ডাঃ সংকট সমাধান হবে।

এ জন্য মাস খানিক অপেক্ষা করতে হবে। অন্যান্য সমস্যা সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আশাকরি খুব শিগ্রই এ সব সমস্যার সমাধান হবে।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*