প্রধান মেনু

শরণখোলায় ৩ বছর স্কুলে অনুপাস্থিত থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর প্রধান শিক্ষকের

রিপোর্ট :আলোরকোল ।।
বাগেরহাটের শরনখোলায় শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজশে বিদ্যালয়ে বছরের পর বছর ধরে উপাস্থিত না থেকেও নিয়মিত বেতন ভাতা তুলেছেন এক প্রধান শিক্ষক। ওই শিক্ষক উপজেলার ৬৫নং দক্ষিন খোন্তাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা মোঃ রফিকুল ইসলাম ১৯৮৭ সালে ৬৫নং দক্ষিন খোন্তাকাটা রেজিষ্টার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন । পরবর্তীতে ২০১৩ সালে স্কুলটি জাতীয় করন হলে নানা সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেন।

কিন্তু গত তিন বছর ধরে তিনি অসুস্থতার ভান করে চিকিৎসার নামে ঢাকা, খুলনা ও রাঙ্গামাটি সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও মেডিকেল কিংম্বা ছুটির কোন আবেদন নেই সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে সহ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরে। তবে, কর্মক্ষেত্রে অনুপাস্থিত থাকলেও হাজিরা খাতায় বাবুলের স্বাক্ষর রয়েছে নিয়মিত। এছাড়া তার হাজিরার বিভিন্ন অংশে (ফ্লুইড) সাদা কালির ব্যাবহার রয়েছে। অপরদিকে, এ সুযোগে অন্য শিক্ষকরা তাদের খেয়াল খুশিমতো স্কুলটি পরিচালনা করায় পাঠদানে হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে দিন দিন কমছে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী। সম্প্রতি স্কুলটিতে গিয়ে মাত্র ২ জন শিক্ষিকা সহ ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেনীর ৩টি ক্লাসে ২৫/৩০ জন শিক্ষার্থী দেখা যায়।

এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বাবুলের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারি শিক্ষিকা হেলেনা বেগম বলেন, স্যারে অসুস্থ তাই ২ বছর ধরে চিকিৎসা করাচ্ছেন বলে আমরা শুনেছি । বর্তমানে তিনি স্কুলে নেই, আমরা দু’জন শিক্ষক আছি । তাই যে ভাবে পারছি ক্লাস নিচ্ছি। তবে, স্যারের ছুটির কোন কাগজ পত্র স্কুলে নেই। অনুপাস্থি থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর কেন? এবং নিয়মিত কি ভাবে বেতন-ভাতা তুলছেন তা শিক্ষা অফিসের স্যারেরা জানেন। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে, খোন্তাকাটা ইউনিয়নের এক প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা রাত দিন পরিশ্রম করে যে বেতন পাই বাবুল শিক্ষা কর্তাদের সাথে যোগসাজশ করে অসুস্থতার নাটক সাজিয়ে কোন প্রকার মেডিকেল কিংম্বা ছুটি না নিয়েই বছরের পর বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং বেতন ভাতা সহ সরকারি সুযোগ সুবিধা নিয়মিত ভাবে ভোগ করে যাচ্ছেন। বিষয়টি কেউ খেয়াল করছেন না। তবে, ৭মার্চ (শনিবার) দুপুরে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বাবুল মুঠোফোনে বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়েবেটিকস সহ নানা রোগে আক্রান্ত।

তাই তিনি ঢাকায় রয়েছেন। এছাড়া মাঝে মধ্যে মৌখিক ছুটি নিয়ে চিকিৎসা করাতে বিভিন্ন জায়গায় যান ঠিক। কিন্তু বছরের পর বছর স্কুল ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে বিদ্যালয়টি তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারি শিক্ষা অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান পাইক বলেন, অসুস্থার বিষয়ে ওই প্রধান শিক্ষক কোন ছুটি নেয়নি । বছরে ২০দিন ছুটি পাওনা তা নেয়ার জন্য মাঝে মধ্যে ফোন করে থাকেন ।
অপরদিকে, এ বিষয়ে জানতে চেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আশ্রাফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি। ##

 






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*