প্রধান মেনু

ঋণ শোধের চিন্তায় দিশেহারা

শরণখোলায় বৃষ্টির অভাবে চাই কারিগররা বিপাকে

সাবেরা ঝর্না  ।।
দেশের গ্রামীন জনপদের অন্যতম উপকরন মাছ ধরার ফাঁদ চাঁই গ্রামীন পরিবেশে আবাদী ধানী জমির মাঠে ডোবার কোলে ঘেসে ও খাল বিলে চাঁই পেতে জেলেরা মাছ ধরে। কিন্তু ভরা আষাঢ়েও বৃষ্টির দেখা নেই। মৌশুমের অর্ধেকটা সময় শেষ।

পানির অভাবে চাইর চাহিদা কম থাকায় বেচাকেনা কম হচ্ছে। যাও বিক্রিয় হচ্ছে তাও গত বছরের তুলনায় তিনের এক ভাগ কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার চাঁইগ্রামখ্যাত উত্তর কদমতলা গ্রামের চাই কারিগররা মহাজন ও এনজিও’র ঋনের টাকা কিভাবে শোধ করবে কিংবা পরিবারের খরচ কি ভাবে মিটাবে। সে চিন্তায় দিশাহারা হয়ে পরছে।

বৃহস্পতিবার খোকন হাওলাদার, হাবিব হাওলাদারের, জামাল মুন্সি ওফরিদ মিয়ার সাথে চাঁইয়ের ব্যপারে খোজ খবর নিতে গেলে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চাঁই ব্যবসায়ীরা এ প্রতিনিধিকে বলেন, বছরের জৈষ্ঠ্য, আষাঢ় ও শ্রাবণ এ তিন মাস তারা ব্যবসা করেন।

এর আগে মাঘ মাসে গ্রাম থেকে বাঁশ ও অন্যান্য উপকরণ কিনে মাছ ধরার চাঁই বানানো কাজ শুরু করেন। বৈশাখ মাস পর্যন্ত তারা একেকজন এক থেকে দেড় হাজার চাঁই তৈরী করেন। জৈষ্ঠ্য আষাঢ়ের বৃষ্টিতে মাঠ ঘাট পানিতে তলিয়ে গেলে তাদের বেচা কেনার ধুম পড়ে যায়।

সাধারণ মানুষ চাঁই কিনে নিয়ে খাল বিল মাঠ ঘাটে চাঁই পেতে মাছ ধরেন। তারা বছরে এক একজনে লক্ষাদিক টাকার চাঁই বিক্রি করে অর্ধলক্ষাধিক টাকা লাভ করেন। যা দিয়ে সারা বছর সংসার চালান। এ বছর তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মাঠে ঘাটে পানি নেই ফলে চাঁই বিক্রি হচ্ছে কম, এবং দামেও কম। মৌশুমের অর্ধেকটা সময় পেরিয়ে এসে তাদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে বানানো চাঁই অবিক্রিত থেকে যাবে বলে।

একই ধরণের কথা বলছিলেন চাঁই ব্যবসায়ী আনোয়ার আকনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, দুলাল হাওলাদার, রফিকুল, হেলাল ও রাসেল হাং। তারা আরো জানায় মোড়েলগঞ্জ, সন্যাসী, তুষখালী, মঠবাড়ীয়া, ভান্ডারিয়া সহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতা এসে পাইকারী দরে হাজার হাজার চাঁই কিনে নিয়ে যায়।

একটি চাঁই ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা দরে গত বছর বিক্রি হলেও এবছর বিক্রি হচ্ছে সর্বউচ্ছ ৭০/৮০ টাকা। যার কারনে তারা লোকশানের মুখে পরবেন। এখানে বছরে প্রায় ২০/২৫ লাখ টাকার চাঁই বেচাকেনা হয়ে থাকে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় চাঁই তেমন বিক্রি হচ্ছেনা।

বানানো হাজার হাজার চাঁই অবিক্রিত থাকার আশংকা তাদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। এনজিও এবং মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ এনে তারা বাঁশ সহ চাঁই বানানোর উপকরণ কিনেছেন। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ও বিনা সুদে ঋণ পেলে তারা ভালো ভাবে চাঁই ব্যবসা করে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার নির্বাহ করতে পারতেন।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*