প্রধান মেনু

২ কিলোমিটার ভেরিবাধের দাবি

মোড়েলগঞ্জে পানগুছি নদীর ভাঙ্গনে হুমকির মুখে ৪০ পরিবার

\
এম.পলাশ শরীফ ।।
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে পানগুছি নদীর অপ্রতিরোধ্য ভাঙ্গনে হুমকির মুখে ৪০টি পরিবার। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ১০০ একর ফসলি জমি, পানি উন্নয়বোর্ডের ভেরিবাধ ও রাস্তা সহ বসতবাড়ি। গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন অনেক পরিবার।

যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে শ্রেণিখালী হয়ে ঘষিয়াখালীর সাথে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসি দুই কিলোমিটার টেকশই ভেরিবাধের দাবি জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখাগেছে, পানগুছি নদীর তীরবর্তী বলইবুনিয়া ইউনিয়নের শ্রেণীখালী গ্রামটি সর্বত্রজুড়ে ভাঙ্গনের মুখে। টানা ৪র্থ বারের ভাঙ্গনে গত শনিবার রাত ৮টা থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দৈবজ্ঞহাটি উপ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত বিষখালী থেকে হরগাতি পর্যন্ত শ্রেণিখালী এলাকায় বাধের অংশ বিশেষ ধ্বসে যেতে শুরু করে।

এতে শ্রেণীখালী গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান হাওলাদার, শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার, মিজানুর রহমান হাওলাদার, আবু বকর হাওলাদার ও এশারাত শেখের কয়েক একর জমি, বাগান, পুকুর ও পানিউন্নয়ন বোর্ডের ভেরিবাধ রাস্তাসহ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে হুমকির মুখে রয়েছে ওই গ্রামের ৪০ পরিবার।

কথা হয় ওই গ্রামের বাসিন্দা শ্রমীক তোফাজ্জল হোসেন হাওলাদার (৫০), কৃষক আব্দুল মজিদ শেখ (৭৫), দিনমজুর লুৎফর রহমান শেখ (৪৫), ইব্রাহিম শেখ (৪০), লোকমান হাওলাদার (৩৮), মনির শেখ (৪৫), শাহাজাহান হাওলাদার (৬০), জামাল হোসেন (৫৫) ও আলকাজ খন্দকার (৭০) সহ একাধিক বাসিন্দারা বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তীতে ২০/৩০ বছর ধরে এভাবে একের পর এক ভাঙ্গনে সর্বশান্ত করছে তাদের।

ইতোমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ১০০ একর ফসলি জমি, তাদের বসতবাড়ি ঘর, পুকুর গাছপালা সহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এলাকা ছেড়ে অনেক পরিবার অন্যত্র বসতবাড়ি করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। অনেকে আবার সর্বশ্ব হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে অন্যের বাড়িতে। কেউ কেউ শহরমুখি হয়েছে। এক সময়ে এই গ্রামে বসবাস ছিলো শতাধিক পরিবারের।

এদের মধ্যে অনেকেই ভাঙ্গনের মুখে পৈতিক ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব প্রায়। প্রতিনয়ত তাদের থাকতে হচ্ছে আতংকে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ৫টি পরিবার এখনও ঝুঁকি নিয়ে ভাঙ্গনের মুখে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বসত ঘরে থাকছেন।

আতংকে রয়েছে যেকোন সময় বিলিন হয়ে যাবে তাদের মাথাগোঁজার ঠাইটুকু বসতবাড়িটিও। স্থায়ী ভিত্তিতে দুই কিলোমিটার জুড়ে টেকশই ভেরিবাধের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসি।

এ ঘটনার পরপরই পানিউন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। গ্রামটিতে অতিরিক্ত পানি প্রবেশ না করতে পারে প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ১৫০ মিটার ধরে রিং-ডাইক বস্তা ভর্তি মাটিদিয়ে বলে জানিয়েছেন পানিউন্নয়ন বোর্ডের (এসও) মো. আলতাফ হোসেন।

মঙ্গলবার দুপুরে ২য় দফায় ঘটনাস্থল পদির্শন করেছেন পানিউন্নয়ন বোর্ডের খুলনা সার্কেলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. সিদ্দিকুর রহমান। তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন ও বাগেরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ্জামান খান সহ একটি টিম।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান আলী খান বলেন, পানগুছি নদীর ভাঙ্গনে শ্রেণী খালী গ্রামটির একের পর এক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামবাসি। এ ভাঙ্গন প্রতিরোধে দোনা খাল হয়ে সোনাখালী খাল পর্যন্ত ২ কিলোমিটার টেকশই ভেরিবাধ হলেই ভাঙ্গন প্রতিরোধ সম্ভাব।

এ সর্ম্পকে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, শ্রেণী খালী গ্রামে নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে পানিউন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভাঙ্গন প্রতিরোধে জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চাওয়া হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যেমে।

এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ্জামান খান বলেন, পানগুছি নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ১০ কিলোমিটার পাইলিং এর জন্য ইতোমধ্যে প্রোপজল দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ১৫০ মিটার ধরে প্লাস্টিকের মাটি ভর্তি বস্তা রিং ডাইক বসানো হচ্ছে।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*