প্রধান মেনু

লাখো মতুয়া ভক্তের মিলন মেলা

মোড়েলগঞ্জে গোপাল চাঁদ বারুণী মেলা শুরু

এম.পলাশ শরীফ  ঃ
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ৯৭তম গোপাল চাঁদ বারুণী মেলা। (১৭ এপ্রিল) বুধবার সকাল থেকেই মদন ত্রয়োদশী তিথিতে লাখো লাখো ভক্তের সমাগমে উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে বারুণী মেলা। দেশের অভ্যান্তরীন ৪শ’টি দলসহ পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপাল, ভুটান থেকে লক্ষাধিক ভক্ত ইহজাগতীক পাপ মোচন ও পারামার্থিভ কল্যান লাভের জন্য স্নানে অংশ নিয়েছেন। তিনদিন স্থায়ী হবে এ মেলা।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন্নাহার, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস, পুলিশ সুপার কঙ্কজ চন্দ্র রায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, শ্রীধাম ওরাকান্দি মতুয়া চার্য সুব্রত সাধু ঠাকুর, মোরেলগঞ্জ থানার ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) ঠাকুর দাস মন্ডল সহ রাজনৈতিক সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ এ মেলায় সমবেত হয়। মঙ্গলবার মেলা উপলক্ষে তার আগেরদিন থেকেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে মতুয়া ভক্ত নারী পুরুষ ডাংকা, কাশ নিশান উড়িয়ে হরিনামে মাতোয়া হয়ে গোপালচাঁদ তৃর্থস্থানে কামনা সাগরে পুর্ন মেলা করে ভক্তের মনের বাসনা করে বলে বর্তমান গদিনশিন মতুয়া চার্য সাগর সাধু ঠাকুর জানান।

গোপাল সাধুর এ ধামে এ পর্যন্ত ৪ পুরুষ গত হয়েছেন। বর্তমান গদিনশীন তরুণ সেবাইত সাগর সাধু ঠাকুর বলেন, শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২০৮তম জন্ম স্মরণে বাংলা ১৩২৮ সাল থেকে এখানে মতুয়া ভক্তদের সমাগম ঘটছে যা এখন ‘গোপাল সাধুর’ মেলা নামে পরিচিত।
প্রায়াত গোপাল সাধুর বসতবাড়িসহ ২৪ বিঘার বাগানবাড়িতে বসবে এ মেলা। দিঘীতে স্নান করবে ভক্তরা। মেলা ও স্নান নিয়ন্ত্রনের জন্য থানা পুলিশ, আনছার ভিডিপি ও স্থানীয় ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।
শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর বাংলা ১২১৮ সালে বৈশাখী পূর্ণিমায় সোমবার গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে জন্ম গ্রহন করেন। ধর্মীয় মতাদর্শে হরিচাঁদ ঠাকুর ওড়াকান্দি থেকে বঙ্গভারত উপমহাদেশে শোসন, নিস্পেশন বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন অঞ্চলে ভক্ত অনুসারী তৈরী হয় তার। যারা এখন মতুয়া সমম্প্রদায় নামে পরিচিত।
মতুয়া ভক্তরা প্রতি বছর মধুকৃষ্ণা পূর্ণিমার ত্রয়োদশী তিথিতে ওড়াকান্দিতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মোৎসব পালন করেন। যা এখন বারুণী স্নান ও মহামেলা নামে পরিচিত। ওড়াকান্দি মেলার ১৫দিন পরে ঠাকুরের দোয়ালীয়া বাড়ি গোপাল চাঁদের লীলা নিকেতন মোরেলগঞ্জের লক্ষীখালীতে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় বারুণী স্নান।
গোপাল সাধুর এ মেলা সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এখানে জমায়েত হন। এদিকে শ্রী শ্রী গোপালচাদ সাধু ঠাকুরের বারুনী মেলা উপলক্ষে মেলায় আগত মতুয়া ভক্তবৃন্দ সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ডাংকা কাস, নিশান সহকারে যাত্রীপথে শত শত মতুয়া ভক্তের নারী পুরুষের দল সমবেত হয় মোরেলগঞ্জ শ্রী শ্রী হরিগুরুচাদ মন্দিরে। সেখানে ভক্তদের হরিনামে মুখরিত হয়ে ওঠে মন্দির প্রাঙ্গন।

ভক্তদের যেনো এক মিলন মেলায় পরিনত হয়। আগত ভক্তদের মাঝে বিতরণ করা হয় প্রসাদ। এসময় ভক্তদেরকে বরন করে নেয় মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ। মতুয়া চার্য রবিন্দ্রনাথ হালদার, সুবদেব হালদার, প্রভাষক সুষেন কুমার ঢালী, উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, রতন কুমার সমাদ্দার ও মন্দিরের পুরোহিত মাষ্টার পংকজ চন্দ্র হালদার।
এ বিষয়ে জিউধরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন, তার পূর্ব পুরুষ থেকেই গোপালচাদ ধামের অনুসারি মতুয়া ভক্ত সেক্ষেত্রে তিনিও প্রতিবছর এ গোপালচাদ মেলায় শতাধিক ভক্তবৃন্দ নিয়ে পরিচালনা করে আসছে এবং এ ধামের আগত ভক্তদের প্রসাদের জন্য তার পক্ষ থেকে বিশেষ সহযোগিতা করে আসছে বলে তিনি জানান। #

 






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*