প্রধান মেনু

মঠবাড়িয়ায় বিষপানে বাবা মেয়ের আত্মহত্যা, জামাই গ্রেফতার

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি :

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ঝাটিবুনিয়া গ্রামের এক সন্তানের জননী জান্নাতি বেগম হ্যাপি (২১) স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোক সইতে না পেরে বাবা জাকির হোসেন (৪৮) বাড়ির লোকজনের অগোচরে বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। রবিবার রাতে স্বজনরা বিষপানের পর প্রথমে মেয়েকে পরে বাবাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সোমবার সকালে পুলিশ বাবা-মেয়ের মরাদেহ উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা মর্গে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এঘটনায় ওই রাতে গৃহ বধূর দাদা মন্নান হাওলাদার বাদি হয়ে একটি আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করেন। পরে নিহত গৃহবধূর স্বামী মামুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূ উপজেলার সাপলেজা ঝাটিবুনিয়া গ্রামের মামুন মিয়ার স্ত্রী। রাইসা আক্তার তাবাসসুম নামে তাদের সাড়ে তিন বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

মামলা ও থানা সূত্রে জানা যায়, জান্নাতির তিন মাস বয়সের সময় বাবা জাকির হোসেন সুপারি গাছ থেকে পরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। এরপর হেপীর মা অন্যত্র চলে যায়। শিশু সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জান্নাতির বাবা আর দ্বিতীয় বিয়ে করেননি। তিনি মেয়েকে লালন পালন করে সাপলেজা ঝাটিবুনিয়া গ্রামের মৃত ফরিদ উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে ও আপন বোনের ছেলে মামুন হোসেন হাওলাদারের সঙ্গে ছয় বছর আগে জান্নাতির বিয়ে হয়। বিয়ের পর মামুন ঘর জামাইরমত শ্বশুর বাড়িতে (মামা বাড়ি) বসবাস শুরু করে। তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সম্প্রতি মামুন পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ সৃস্টি হয়। এ কলহের জেরে মামুন স্ত্রী জান্নাতিকে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।

ঘটনার দিন রাতে মামুন স্ত্রীর সাথে কথা কাটির পর স্ত্রীকে মানসিক নির্যাতন করে। এতে হেপি অভিমান করে রবিবার বিকালে বিষপান করেন। পরে তাকে রাতে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মেয়ে জান্নাতির মৃত্যুর দুই ঘন্টার পর বাবা জাকির হোসেনও বিষপান করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
দাদা মন্নান হাওলাদার জানান, জান্নাতি বিষপন করে আত্মহত্যা করলেও মামুন ও তার পরিবার জান্নাতি স্ট্রোক করেছে বলে হাসপাতালের ডাক্তার, আত্মিয়স্বজনসহ এলাকাবাসীকে বলে বেড়ান। পরে আমার ছেলে জাকির হোসেন বিষ পান করেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এঘটনায় আমি একটি আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা থানায় দায়ের করি।

মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহা. নূরুল ইসলাম বাদল জানান, এঘটনায় গৃহ বধূর দাদা মন্নান হাওলাদার বাদি হয়ে একটি আত্মহত্যা প্ররোচনায় মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় গৃহবধূর স্বামী মামুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ইসরাত জাহান মমতাজ
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর)






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*