মঠবাড়িয়ায় বিত্তবানদের নামের ভিরে দুস্থের ঠাই মিলছেনা তালিকায়
মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি :
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মিরুখালী ইউনিয়নের বড়শৌলা গ্রামের দরিদ্র বিধবা সুমতি মন্ডল ও সত্তোরোর্ধ বিধাবা সরলা হালদার দুস্থ বিধাব নারী হিসেবে ওয়ার্ড সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনির তালিকায় নির্বাচিত হয়নি।
তবে করোনা দুর্গত হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার তালিকায় উঠেছিল। শেষে স্থানীয় ইউপি সদস্য ওই দুই অসহায় বিধবার নামসহ ১৫ দুঃস্থের নাম কেটে দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতোন অবস্থা সম্পন্নদের নাম তারিকাভূক্ত করে উপজেলা পরিষদে জমা দেন। এতে ১৫ জন প্রকৃত দুঃস্থ প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা হতে বাদ পড়ে যান।
মিরুখালীর বড়শৌলা গ্রামের ই্উপি সদস্য আব্দুল লতিফ খানের বিরুদ্ধে বঞ্চিত ১৫জন দুস্থ এ অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বুধবার দুপুরে বঞ্চিত ১৫জন দুঃস্থ স্থানীয় বড়শৌলা গ্রাম্য বাজারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের বিচার দাবি করে মানববন্ধন করেন। এসময় বঞ্চিত দুঃস্থরা নতুন করে তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্তির দাবি জানান।
ভূক্তভোগিরা অভিযোগ করেন, ইউনিয়ন পর্যায় করোনা ভাইরাস দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা ৩০ কেজি চাল ও ২হাজার ৫০০ টাকা প্রদানের কার্যক্রমের তালিকা প্রণয়ণে ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়। এতে উপজেলার তিন নম্বর মিরুখালী ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল লতিফ খানকে সভাপতি করে নয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য তালিকা প্রনয়ণ কমিটির সহ সভাপতি এমিলি বেগম অভিযোগ করেন, নয় সদেস্যর কমিটি প্রথমে ৭০ জনে দুস্থদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। পরে কমিটির সভাপতি আব্দুল লতিফ তালিকা নিজের বাড়িতে নিয়ে ওই তালিকা থেকে দুই বিধাবা দরিদ্র নারীসহ ১৫ জনের নাম নিজের ইচ্ছেমত কেটে তার নিজের লোকদের নামের তালিকায় সংযোজন করে ইউএনও কাছে জমা দেন। পরে বঞ্চিত দুস্থরা প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত আবেদন করেন।
বড়শৌলা গ্রামের দরিদ্র আব্দুল জব্বার হাওলাদার ( ৯০) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি বুড়া মানুষ কাজ কর্ম করতে পারিনা। আমার নামডা প্রধানমন্ত্রীর সাহায্যর তালিকায় উঠছিলো। হেই নামডা কেমনে মেম্বারে কাটলো ? আমাগো নাম ঠিক কইরা দ্যান।
স্থানীয় বড়শৌলা গ্রামের সফল কৃষক শাহ আলম বলেন, এই করোনা সংকটে দুঃস্থ মানুষ বঞ্চিত হওয়া দুঃখজনক। মাননীয় প্রধানন্ত্রীর সহায়তার তালিকা নিয়া যদি মেম্বর নয়ছয় করে তা দেখার জন্য তো প্রশাসন আছে । তারা নিশ্চয়ই বঞ্চিত ১৫জন দুস্থ মানুষকে তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করবেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আব্দুল লতিফ খান ১৫ দুস্থ মানুষের নাম বাদ পড়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার বড়শৌলা গ্রামে বছরে মাত্র একটি ফসল হয়। এখানে দুস্থ মানুষ বেশী । আমি ১০৫ জনের তালিকা করেছিলাম। শেষে নানা সংকটে ইউনিয়ন পরিষদ হতে আমাকে মাত্র ৭০ জন নির্ধারণ ৯করে দেয়। ফলে ওই ১৫ জন দুস্থকে নতুন তালিকায় বাদ দিতে হয়েছে। এটা আমার ইচ্ছাকৃত নয়। আমার ওই ওয়র্ডে দুস্থ আরও বেশী।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উর্মী ভৌমিক বলেন, তালিকা নিয়ে অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।