প্রধান মেনু

 এসআই প্রত্যাহারর

মঠবাড়িয়ায় বিউটিশিয়ানকে  হত্যা অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি :

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বিউটিশিয়ান শাম্মী আক্তার (৪০)কে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ও দৃষ্টান্তমীলক বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কেএম লতীফ ইনস্টিটিউশনের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

অপর দিকে হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জেন্নাত আলীকে প্রত্যাহার করে পিরোজপুর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। মঙ্গলবার রাতে পিরোজপুর পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে এ আদেশ দেয়া হয়। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান বুধবার দুপুরে জেন্নত আলীর প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে কি কারণে তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়েছে তা তিনি জানাননি।

আপন বড় ভাইয়ের স্ত্রী স্কুল শিক্ষিক আয়সা খানমের সাথে নিহত বিউটিশিয়ান শাম্মীর স্বামী সালেকিনের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় স্বামী ও তার প্রেমিকা আপন বড় ভাবি মিলে বালিশ চাপা দিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। নিহত শাম্মী মঠবাড়িয়া পৌরশহরের কে.এম লতীফ সুপার মার্কেটে একটি শাম্মী বিউটি পার্লারের স্বত্তাধিকারি।

নিহত শাম্মী আক্তারের ছেলে কে.এম লতীফ ইনস্টিশনের দশম শ্রেণির ছাত্র। তার সহপাঠীদের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের কয়েক শ ছাত্র ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষিকা আয়শা খানম ও নিহত বিউটিশিয়ান শাম্মীর স্বামী সিরাজুস সালেকীন এর দ্রুত বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূরর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ডাকবাংলো মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

পরে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন স্কুল শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন, গোলাম রাব্বি, কামরুল হাসান, মো রাকিব ও মো. ইমরান হোসেন প্রমুখ। এসময় ব্ক্ষিুব্ধ শিক্ষার্থী হত্যায় জড়িত নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আয়শা খানমকে বহিষ্কার ও হত্যাকারিদের ফাঁসির দাবি জানান।

কে.এম লতীফ ইনস্টিশনের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষক আয়সা খানমের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা ডাকা হয়েছে বৃহস্পতিবার।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বিউটিশিয়ান শাম্মি আক্তারের সাথে ফিরোজ আলমের প্রথম বিয়ে হয়। তাদের দুই সন্তান থাকা অবস্থায় গত ১৩ বছর আগে বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর শাম্মী শিশু সন্তানদের নিয়ে দিশে হারা হয়ে ঢাকাতে ইট ভেঙ্গে ও চা, বিড়ি সিগারেটের দোকান করে পার্লারের কাজ শিখেন। পরে মঠবাড়িয়া বড় ভাবীর সহযোগিতায় মঠবাড়িয়াতে বিউটি পার্লারের ব্যবসা শুরু করে দুই সন্তানের লেখাপড়া চালিয়ে আসছিল।

গত দুই বছর সিরাজুস সালেকিন নামে এক তরুণের সাথে তাঁর দ্বিতীয় বিয়ে হয়। আপন ভাবি স্কুল শিক্ষক আয়শা খান এ বিয়ে মধ্যস্তা করেন। বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে শাম্মীর স্বামী সালেকিন ঢাকা থেকে মঠবাড়িয়া আসেন। বিবাহ বাাির্ষকী অনুষ্ঠানের জন্য রবিবার রাতে স্বামী সালেকিন ও ভাবি আয়শা খানম তাদের থানাপড়ার ভাড়াটিয়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। রাতের খাবার শেষে শাম্মি তার স্বামীকে নিয়ে নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। পাশের আলাদা কক্ষে ভাবি আয়শা খানম ঘুমান।

রাত তিনটের দিকে শাম্মি ঘুম থেকে জেগে স্বামীকে বিছানায় না পেয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে ভাবির কক্ষে ঢুকে দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। এ নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায় স্বামী সালেকীন ও ভাবি আয়শা মিলে শাম্মীর মুখম-লে বালিশ চেপে ধরে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। পরে পুলিশ হাসপাতাল হতে তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহত ওই গৃহবধূর ছেলে সাইম আলম (১৭) বাদী হয়ে মঙ্গলবার মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

পুলিশ সিরাজুস সালেকীন (৩৩) ও আপন মামি স্কুল শিক্ষিকা আয়শা খানম (৫০)কে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে।
গ্রেপ্তারকৃত স্বামী শেখ সিরাজুস সালেকীন লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার দরবেশপুর গ্রামের শেখ মোহম্মদ আলীর ছেলে এবং আয়শা খানম মঠবাড়িয়া শহরের কেএম লতীফ ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র শিক্ষিকা ও পার্শবর্তী শরণখোলা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের ব্যাংকার এমাদুল হকের স্ত্রী।
এস আই জিন্নাত আলী

ইসরাত জাহান মমতাজ
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
০১৭২৬১৮৪০৪৯






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*