মঠবাড়িয়ায় ফসলি জমি দুই থেকে তিন ফুট পানিতে প্লাবিত
মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি ।।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় শনিবার ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাব ও ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেতের পর উপজেলার বলেশ^র নদ তীরবর্তী ও জেলে পাড়ার মানুষ আতংকিত হয়ে পড়েছে।
দুর্যোগের সম্ভাব্য আঘাত হানার বিষয়ে মেগাফোনে জনগণকে আগাম সতর্ক বার্তা দেয়া হচ্ছে। উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তুষখালী, বড়মাছুয়া, আমড়াগাছিয়া,সাপলেজা, বেতমোড় ইউনিয়নে সতর্ক সংকেত হিসেবে লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এসব এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্ততি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।
উপজেলায় ১৫ টি ইউনিটে সিপিপির মোট ১২৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তত রয়েছেন।
এদিকে বুলবুলের প্রভাবে বলেশ^র নদে অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবনে নিন্মঞ্চাল প্লাবিত হয়েছে।
ক্ষেতাছিড়া ও কচুবাড়িয়া পয়েন্টে বেড়িবাঁধ নদের প্লাবনে হুমকীর মুখে রয়েছে। শনিবার দুপুর থেকে এসব এলাকার মানুষ রাতের ঝড়ে পড়ার আতংকে পাশ^বর্তী সাইক্লোন শেল্টারে আসা শুরু করেছে।
সাথে গৃহস্থ পরিবার গুলো তাদের গবাদি পশু নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে আনছেন।
জানাগেছে, উপজেলার ৫৮টি সাইক্লোন শেল্টারে দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় দুপুর থেকে আতংকিত হয়ে মানুষ আশ্রয় নিতে ছুটে আসছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিএম সরফরাজ ্এর তত্বাবধানে সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকরা বলেশ^র নদের মাঝের চরের ১২০০ জেলে পরিবার সদস্যদের অর্ধেক মানুষকে মাঝের চর ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছেন।
এছাড়া যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ওই চরের বাকি জেলে পরিবার গুলোকে নদী পার করে উলুবাড়িয়া সাইক্লোন শেল্টারে উঠিয়ে দিয়েছেন। আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে আশ্রিত পরিবার গুলোর জন্য শুকনা খাবার ও খাবার পানি বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে বলেশ^র নদের বড়মাছুয়ায় সেনাবাহিনী নির্মিত ঘূণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ২ শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিতে দেখা যায়।
শুধু এ আশ্রয় কেন্দ্রে নয় উপকূলের ঝুঁকিপুর্ন আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে দুপুর থেকে দুর্যেগ কবলিত মানুষ আসা শুরু করেছে। অনেক পরিবার নিজের বসতি ফেলে গাঁয়ের পাকা বাড়িতেও আশ্রয়ের জন্য ছুটছেন।
মঠবাড়িয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) রিপন বিশ্বাস জানান, স্বেচ্ছাসেবদের সতর্ক রাখা হয়েছে। যাতে ঝড় শুরুর আগেই মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া সম্ভব হয়। এজন্য উপজেলা পরিষদে সার্বক্ষণিক একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরে আশ্রয় কেন্দ্র না যাওয়ায় এসব মানুষ চরম বিপন্ন হয়েছিল। এবার এসব এলাকার মানুষ সচেতনভাবে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আগাম তৎপর ।
উপকূলের কচুবাড়িয়া, খেতাচিরা বড়মাছুয়া ইস্টিমার ঘাট সংলগ্ন প্রায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে।
এছাড়া নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি দুই থেকে তিন ফুট পানিতে প্লাবিত হয়ে। এতে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি আসঙ্ককা রয়েছে। রাত যতই বাড়ছে উপকূলিয় মানুষ আতঙ্কিত হচ্ছ।