প্রধান মেনু

মঠবাড়িয়ার ঘূর্ণিঝড় আম্পানে দু’জনের মৃত্যু বেরিবাধ ধসে আবাদি জমিতে প্লাবন

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বুধবার রাতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে দুইজন নিহতসহ তিন শতাধিক বসতবাড়ি বিধ্বস্থ হয়। এছাড়া বলেশ^র নদীর তিনটি পয়েন্ট বড় মাছুয়া মোহনা বেড়িবাঁধ, কচুবাড়িয়া ও ক্ষেতাচিড়া মোহনা বেড়িবাাঁধ ধ্বসে কয়েক হাজার হেক্টর আবাদি জমির ফসল তলিয়ে গেছে।

ঝড়ের কবলে পড়ে বুধবার সন্ধ্যায় শাজাহান মোল্লা (৫০) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। সে গিলাবাদ গ্রামের ছেলে। শ্রমিক অপর দিকে আমড়া গাছিয়া ইউনিয়নের ধুপতি মৃত মোজাহার হাওলাদারের  বাড়ী গোলেনুর বেগম (৭০) রাত নয়টার দিকে ঝড়ের কবলে পড়ে প্রতিবেশি এক গৃহস্থ বাড়িতে আশ্রয় নেন।

এর কিছুক্ষন পরে ঝড়ের তীব্রতা বাড়লে ভীত হয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে। আজ বুধবার দুপুরে পিরোজপুর জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন নিহতের বাড়িতে যান ।

এসময় তাদের নগদ অর্থ ও গৃহ নির্মানের জন্য ঢেঊ টিন সহায়তা দেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে, ঝড়ে মঠবাড়িয়া উপজেলায় পাঁচ সহ¯্রাধিক কৃষক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। ঝড় ও জলোচ্ছাসে আউশ বীজতলা ৮৫ হেক্টর, আমন আবাদ ৩৩ হেক্টর,চিনা বাদাম ১৩ হেক্টর, পান ৪ হেক্টর ফল ও শাকসবজি ক্ষেতসহ ২০০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতি সবজি পান ৩০ হেক্টর, সরিষা ২ হেক্টর, হয়েছে। এতে কৃষি দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী সর্বমোট ১০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে ধারণা করা হয়েছে।

তবে কৃষকের কাছে এর ক্ষতির পরিমান দ্বিগুনেরও বেশী। উপজেলার মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের তোরে উপজেলার তিনটি গ্রামের ৩৩৫টি মৎস্য খামার পুকুরের ঘের তলিয়ে ৫ লক্ষ টাকার মাছের ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হয়েছে।
এছাড়া ধান ও বিভিন্ন প্রজাতির রবিশস্যসহ কমপক্ষে ৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অন্তত ১ কিলোমিটার বেড়িবাধ ভেঙে ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আর ৬ হাজার ৭৫৫টি মাছের ঘের/পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কাঁচাপাকা ২৫ কিলোমিটার রাস্তা। আর কাঁচাপাকা মিলিয়ে ২৩৪৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হে

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল থেকে পিরোজপুরের নদ নদীগুলোতে জোয়ারের পানি বাড়তে থাকে। সকালে জোয়ারের পানির চাপে মঠবাড়িয়া উপজেলার মাঝের চরের বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয় ও ফসলের খেত প্লাবিত হয়। সন্ধ্যায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে জেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। রাত নয়টার দিকে প্রবল বাতাসে জোয়ারের পানিতে মঠবাড়িয়া উপজেলার খেতাছিড়া গ্রামের বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থান ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে গ্রামের শতাধিক কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জোয়েরের পানি পাকা সড়ক উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় বেশ কিছু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মঠবাড়িয়া উপজেলার খেতাছিড়া গ্রামে বুধবার সন্ধ্যার পর বাতাস ও জোয়ারের পানি বাড়তে থাকে। রাত নয়টার পর থেকে খেতাছিড়া গ্রামের কয়েক পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। বাড়ি ঘর চার থেকে পাঁচ ফুট পানিতে ডুবে যায়। উপজেলার মাঝের চরে রাতে সাত থেকে আট ফুট পানিতে প্লাবিত হয়।

চরের বেশির ভাগ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊর্মি ভৌমিক আজ বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে কাঁচা ঘর, রবিশস্য, সড়ক ও বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিরোজপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়মাছুয়া, খেতাছিড়া, কচুবাড়িয়া, মিরুখালী ও রাজারহাটে বেড়িবাঁধ ও বাঁধের ঢালের কিছু ক্ষতি হয়েছে। খেতাছিড়া গ্রামে ৩৬ থেকে ৪০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে।

ইসরাত জাহান মমতাজ
       মঠবাড়িয়া 






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*