প্রধান মেনু

বিয়ের ফাঁদে ফেলে জঙ্গি সংগঠনে অন্তর্ভুক্তির দায়ে এক নারীসহ দুই সদস্য গ্রেপ্তার

আলোরকোল ডেস্ক ।।

প্রেম ও বিয়ের ফাঁদে ফেলে জঙ্গি সংগঠনে অন্তর্ভুক্তির দায়ে এক নারীসহ আনসার আল ইসলামের দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-২)। এ সময় আরেক নারীকেও উদ্ধার করে র‌্যাব।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উয়িংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান।

এমরানুল হাসান জানান, র‌্যাব-২’র একটি আভিযানিক দল গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে বরিশাল শহরর একটি মাদ্রাসায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় সাফিয়া আক্তার তানজী নামে এক নারীকে উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া আনসার আল ইসলামের সক্রিয় নারী সদস্য জান্নাতুল নাঈমাকে (২২) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ডেমরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য মো. আফজাল হোসেনকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযানে দুজনের কাছ থেকে উগ্রবাদী বই ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উদ্ধার তানজীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চট্রগ্রাম থেকে বরিশাল নিয়ে আসা ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন গ্রেপ্তার নাঈমা।

সাফিয়া আক্তার তানজীনের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, চট্রগ্রামের একটি কলেজে বিবিএ অধ্যয়নরত ছিলেন তানজী। চট্রগ্রাম শহরে বসবাস করতেন তিনি। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে নাঈমাসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেখানেই একটি গ্রুপে তাকে যুক্ত করেন নাঈমা। পরে তিনি ও অন্যান্য নারী সদস্যদের মাধ্যমে বরিশাল নিবাসী সহিফুল ওরফে সাইফের সঙ্গে পরিচয় হয় তানজীর। পরে তার সঙ্গে ফেসবুকেই সম্পর্ক গড়ে ওঠে সাইফের। এ ছাড়া নাঈমা ও অন্যান্য নারীদের প্ররোচনায় সাইফের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন তানজী।

লে. কর্নেল এমরানুল জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর পর নাঈমা ও অন্যান্য নারী সদস্যদের প্ররোচণায় সাইফের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে গত ২৬ জুন ঘর ছাড়েন তানজী। এ সময় নাঈমা তার সঙ্গে ছিলেন।

বরিশালে পৌঁছানোর পর ‘কথিত’ প্রেমিক সাইফুল তানজীকে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করান। কিন্তু বিয়ের কথা বললে সময়ক্ষেপণ করতেন তিনি। মাদ্রাসায় পড়া অবস্থায় তানজীকে জঙ্গিবাদে প্রলুব্ধ করা হয়।

নাঈমাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, তার সহযোগী অন্যান্য সদস্যদের প্ররোচনায় সাইফকে বিয়ে করার জন্য তানজীকে কোরআনের হিফজ করার জন্য শর্ত দেওয়া হয়।

এ ছাড়া তাদের মধ্যে কথা হয়- বিয়ের করবেন বলে হবু স্ত্রীকে মাদ্রাসায় ভর্তি, তার থাকা-খাওয়া, ভরণ পোষণের দায়িত্ব সাইফ বহন করবেন। সে হিসেবে গত ২৬ জুন ২০১৯ তারিখে তানজিকে নিয়ে বরিশালে আসেন।

পরে সাইফ ও নাঈমা কৌশলে তাকে আপন বোন পরিচয়ে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করান। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল মাদ্রাসায় অবস্থানকালীন নাঈমার তত্ত্বাবধানে তানজিকে জঙ্গিবাদে প্রলুব্ধ করা ও উগ্রবাদী কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত করা।

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া মো. আফজাল হোসেন সম্পর্কে র‌্যাব কর্মকর্তা এমরানুল জানান, দীর্ঘদিন ধরে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জড়িত আছেন তিনি। বর্তমানে রাজধানী ঢাকার নিকটস্থ একটি এলাকার স্থানীয় সংগঠকের ভূমিকা পালন করছেন আফজাল। জিজ্ঞাসাবাদে সংগঠনের নির্দেশনা অনুসারে নারী সদস্যদের দলে অন্তর্ভুক্তি ও নারী সদস্যদের দ্বারা নাশকতা পরিকল্পনার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন তিনি।

গ্রেপ্তার হওয়া দুজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উয়িংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*