প্রধান মেনু

শরণখোলায় প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দের টাকা লোপাটের অভিযোগ

আলোরকোল ডেস্ক ।।

বাগেরহাটের শরনখোলায় একাধিক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য সরকারী বরাদ্দের লাখ লাখ টাকা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক সহ স্কুল ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজসে লোপাটের অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্টরা সরকারী লাখ লাখ টাকা তুলে বিদ্যালয়ের ভবন মেরামতের তেমন কোন কাজ করেননি । স্কুল ভবনে রং-তুলির সামান্য আচড় দিয়ে , কোথাও আবার ছিটে ফোঁটা কাজ দেখিয়ে বাকী অর্থ ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধান সহ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে, এসব অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা ককর্মকর্তা সহ শরনখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ।

শরনখোলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর সুত্র জানায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে (পিডিপি-৪) প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়ের ভবন ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য স্কুল প্রতি দুই লাখ টাকা করে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ৪৪টি বিদ্যালয়ের অনুকুলে ৮৮লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় প্রাথমিক ও গনশিক্ষা  মন্ত্রনালয় । কিন্তু উক্ত কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন সংশ্লিষ্টরা ।

সম্প্রতি ক্ষুদ্র মেরামতের অনিয়ম তুলে ধরে উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের বাসিন্দা একটি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং এনজিও কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন মীরু সরকারী অর্থ লোপাট কারীদের বিরুদ্বে ব্যাবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে ,খুলনা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাগেরহাট জেলা প্রসাশক সহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ দাখিল করেন ।

অনুসন্ধানে জানাগেছে , উপজেলার ৪১নং উত্তর কদমতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , ৪৯ নং উত্তর সোনাতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , ৯৭নং কৈইয়ার পাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , লাকুর তলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , ১৫নং রাজৈর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , খোন্তাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , ৪০নং পশ্চিম খোন্তাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , ৩৯ নং মধ্য বানিয়াখলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , ৮০নং সোনাতলা আহম্মদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , ৪৫নং ছোট রাজাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , ৩৪নং ধানসাগর ইউনাইটেট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , ৫৯নং তালতলী উল্লাশী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বরাদ্দ পাওয়া ৪৪টি বিদ্যালয়ের মেরমত কাজের চিত্র প্রায় একই ।

তবে , ভবন মেরামতের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে, উপজেলার কদমতলা এলাকার এক সমাজ সেবক বলেন , সরকারী ভাবে দুই লাখ বরাদ্দ পেয়ে আমাদের ৪১নং উত্তর কদমতলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান, নিন্ম মানের কাঠ দিয়ে সামন্য একটি খুপড়ি ঘর তুলে বাকী টাকা আত্মসাত করেছেন । তবে , শিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, স্কুলে ক্লাস রুম সংকট থাকায় ওই ঘরটি নির্মান করা হয়েছে । সরকারী ভাবে যে টাকা বরাদ্দ পেয়েছি তার চেয়েও অনেক বেশি টাকা ইতিমধ্যে ব্যায় হয়ে গেছে ।

এছাড়া উপজেলার অন্য কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা বলেন, সরকারী অর্থ লোপাটের বিষয়টি সম্পুর্ন কাল্পনিক । তবে বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক স্থানে নানা রকম খরচ দিতে হয়েছে । এছাড়া ম্যানেজিং কমিটির সাথে কথা বলে মেরামত কাজ করা হয়েছে ।

অন্যদিকে, বিদ্যালয় ব্যাবস্থাপনা কমিটির কয়েকজন সভাপতি বলেন, ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দ সহ বিদ্যালয়ের অনেক বরাদ্দের খবর আমরা জানিনা । স্কুল উন্নয়নের অনেক কাজ প্রধান শিক্ষকরা তাদের খেয়াল খুশি মতো করে থাকেন । আমরা আছি শুধু কাজগে কলমে ।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আশ্রাফুল ইসলাম তার যোগ সাজশের বিষয়টি কাল্পনিক দাবী করে বলেন , সরকারী অর্থ ব্যাবহারে কোন প্রতিষ্ঠান প্রধান অনিয়ম করে থাকলে ওই সকল বিদ্যালয়ের প্রধানদের কাছে কৈফত চাওয়া হবে । এছাড়া অনিয় প্রমানিত হলে তাদের বিরুদ্বে বিধিগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে ।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, সরকারী অর্থ লোপাট সহ মেরামত কাজের কোন অনিয়মের অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

এছাড়া বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, মেরামত কাজ সরেজমিনে দেখে বিল দেওয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে, বিদ্যালয়ের আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ আমি পেয়েছি। এসব অনিয়মের সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।##






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*