পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই
দেশের বরেণ্য সংগীত শিল্পী সুবীর নন্দী আর নেই
আলোরকোল ডেস্ক ।।
দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী আর নেই।
মঙ্গলবার (৭ মে )বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টা ২৬ মিনিটে তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে ফাল্গুনী নন্দী।
ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৮ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে নেয়া হয় সুবীর নন্দীকে। তার দুইদিন পর সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও আবার অবনতি হতে থাকে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা চলাকালীন পরপর তিনবার হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি।
সর্বশেষ রোববার (৫ মে) সকালে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন এই শিল্পী। এরপর দ্রুতই হার্টে চারটি রিং পরান ডাক্তাররা।
গত ১৪ এপ্রিল শ্রীমঙ্গল থেকে ফেরার পথে ট্রেনে অসুস্থ হয়ে পড়েন সুবীর নন্দী। তাকে সিএমএইচ এ ভর্তি করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়।
একুশে পদকপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দী ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রেও উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান।
সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আশা ছিল মনে মনে’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘বন্ধু তোর বরাত নিয়া’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কতো যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি’, ‘একটা ছিল সোনার কইন্যা’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’ শ্রোতাদের হৃদয়ে অমর হয়ে আছে।
১৯৮১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে বাজারে আসে। তবে চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে আব্দুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রে।
স্বীকৃতি হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত ওইসব চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে-মহানায়ক (১৯৮৪), শুভদা (১৯৮৬), শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯), মেঘের পরে মেঘ (২০০৪) এবং মহুয়া সুন্দরী (২০১৫)।
ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন সুবীর নন্দী। সিলেট বেতারে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। এরপর ঢাকা রেডিওতে সুযোগ পান ১৯৭০ সালে।
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত সঙ্গীত পরিবারে ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর সুবীর নন্দী জন্মগ্রহণ করেন। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব কেটেছে চা বাগানে। পরিণত বয়সে গানের পাশাপাশি চাকরি করেছেন ব্যাংকে।