প্রধান মেনু

জেলেদের দীর্ঘ দিনের ভাসমান হাসপাতালের দাবী থাকলেও পুরন হয়নি আজও

দুবলারচরের শুটকি পল্লীর প্রায় ২০ হাজার জেলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত 

আলোরকোল ডেস্ক ।।

সুন্দরবনের  দুবলারচরের শুটকি পল্লীর প্রায় ২০ হাজার  জেলে খাবার পানির তীব্র সংকট ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত  রয়েছেন। সাগরের লোনা পানি কবলিত এসব জেলে তেষ্টা মেটানো ও রান্নার কাজে চরের বালি খুঁড়ে কুয়া তৈরি করে পানি সংগ্রহ করে তা  ব্যবহার করেন। ফলে তারা নানা ধরনের পেটের পীড়ায় ভুগছেন। দুবলারচরের অস্থায়ী বাসিন্দা এ জেলেদের জন্য নেই কোনো সরকারি চিকিৎসাব্যবস্থা। জেলেদের দীর্ঘ দিনের ভাসমান হাসপাতাল দাবী থাকলেও পুরন হয়নি আজও ।

 

 ভুক্তভোগী জেলেদের সঙ্গে কথা জানা যায়, দুবলারচর এলাকার চারটি জেলেপল্লিতে খাবার পানির তীব্র অভাব রয়েছে। ১৯৮৫ সালে দুবলারচর ফিশার মেন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা মেজর জিয়াউদ্দিনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে খননকৃত মেহেরআলীর চরের সাগরদীঘি নামের পুকুরটি দুই বছর আগে সাগরে বিলীন হয়ে গেছে।

দুবলার অফিস কিল্লায় ৪০ বছর আগে খননকৃত পানীয়জলের আরেকটি দিঘি বর্তমানে সাগরে বিলীনের উপক্রম হয়েছে। একই এলাকার মাঝেরকিল্লার পুকুরের পানি খাবারের অনুপযোগী পড়েছে এবং স্বল্পতা দেখা দিয়েছে আলোরকোলের পুকুরে পানির।

আলোরকোলের শুঁটকি তৈরির জেলে  রামপালের শুকুর আলী মীর ও মো.শহিদুল ইসলাম জানান, চরে খাবার পানি চরম সংকটের কারণে তারা চরের বালির স্তর খুঁড়ে পায়খানার পাকা রিং বসিয়ে পানি সংগ্রহ করেন সে পানিও খুব সুপেয় না। এ পানি খেয়ে তারা পেটের পীড়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানান। জেলেরা আরো জানান, চরে কোথাও সরকারি কোনো চিকিত্সাব্যবস্থা নেই, হাতেগোনা কয়েকটি ওষুধের দোকানে চড়াদামে ওষুধ পাওয়া যায়। চিকিত্সা বলতে দুই একজন পল্লিচিকিত্সক কয়েকটি জেলেপল্লির শত শত রোগী সামাল দেন।

চরের নিউ মার্কেটের মুদি ব্যবসায়ী হাসেন আলী বলেন, এখন কিছু খাবার পানি পাওয়া গেলেও শুকনো মৌসুমে পানির জন্য হাহাকার পড়ে যায়। তখন সাগরের লোনাপানি একমাত্র ভরসা তবে অনেক দূরের শ্যালারচরের একটি পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করে আনতে হয়।

দুবলা ফিশার মেন গ্রুপের বর্তমান সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রায় ২০ হাজার জেলে অধ্যুষিত দুবলা চরাঞ্চলে বর্তমানে খাবার পানির তীব্র সংকট রয়েছে। দুই একটি  পুকুরে সামান্য পরিমাণে পানি পাওয়া গেলেও আগামী মাসে তাও শুকিয়ে যাবে।

তখন পানির জন্য হাহাকার পড়ে যাবে। লোনা ও দূষিত পানি পান করে জেলেরা ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিসসহ পানিবাহিত নানাবিধ পেটের পীড়ায় ভোগেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সুন্দরবন বিভাগের বড়ো অঙ্কের রাজস্ব আয় হয় দুবলারচর থেকে। এখান থেকে বন বিভাগের বছরে প্রায় ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও সরকার ও বন বিভাগ চরের জেলেদের জীবন মানোন্নয়নে বাস্তবমুখী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

দুবলা জেলেপল্লি টহল ফাঁড়ি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্ট রেঞ্জার অসিত কুমার রায় বলেন, অফিসকিল্লার পুকুরটি সাগরের ভাঙনের কবলে পড়েছে এবং যে কোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে। খাবার পানির সংকটের কারণে জেলেরা লবণাক্ত ও দূষিত পানি পান করে পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*