প্রধান মেনু

খালেদা জিয়া ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে

আলোরকোল ডেস্ক ।।

৭৭৭ দিন পর মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বয়স বিবেচনার শর্তে আগামী ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর গুলশানে নিজ বাসভবন ফিরোজায় অবস্থান করছেন বিএনপি প্রধান। আপাতত নিজ বাসায় কোয়ারেন্টিনে থাকবেন তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার সন্ধ্যায় গুলশানের ফিরোজা ভবনে দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডামের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ইতোমধ্যে তার বাসায় আছেন। তার সঙ্গে ডাক্তার আলোচনা করছেন। আপাতত কিছু দিনের জন্য ম্যাডামকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।’

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘চিকিৎসকরা এ বিষয়ে (কোয়ারেন্টিন) আলোচনা করবেন। তার সঙ্গে যাতে কেউ দেখা করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা তার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা করিনি। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সবাই তার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। শুকরিয়া আদায় করেছেন যে তিনি বাসায় ফিরেছেন। আমরা ম্যাডামকে জানাতে এসেছি, তার মুক্তিতে অনেক খুশি হয়েছি। আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, তিনি যেন এখান থেকে উঠে দাঁড়াতে পারেন। আবার রাজনীতিতে আসতে পারেন। সেই কথাগুলোই বলেছি।’

যে শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা হয়েছে, তার কোনোটা ভঙ্গ করলে তার মুক্তি বাতিল হয়ে যাবে। এই সময়ের মধ্যে তিনি কোনো রাজনীতি করতে পারবেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘সে প্রসঙ্গে আমরা যাবো না। আমাদের যারা আইনজীবী আছেন তারা এ বিষয়ে কথা বলবেন।’

খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় তার ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল টিম অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। চিকিৎসকরা হলেন, রফেসর ডাক্তার এফ. এফ. রহমান, প্রফেসর ডাক্তার রজিবুল ইসলাম, প্রফেসর ডাক্তার আব্দুল কদ্দুস, প্রফেসর ডাক্তার হাবিবুর রহমান, প্রফেসর সিরাজ উদ্দিন ও প্রফেসর ডাক্তার এ. জেড. এম. জাহিদ হোসেন।

এ ছাড়া ফিরোজায় গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে মুক্তির আদেশের নথি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষের হাত ঘুরে আজ বিকেল ৩টার পর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পৌঁছায়। পরে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে হাসপাতাল থেকে বের করে আনা হয় খালেদা জিয়াকে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকে খালেদা জিয়াকে সরাসরি তার গুলশানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে দুপুরে খালেদা জিয়াকে আনতে বিএসএমএমইউতে যান তার পরিবারের সদস্য এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা।

এদিকে, খালেদা জিয়াকে এক নজর দেখতে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের সামনে ভিড় করেন শত শত মানুষ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে খালেদা জিয়াকে বের করার আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সরানোর চেষ্টা করেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দী ছিলেন খালেদা জিয়া। তাকে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ কারাগার স্থাপন করে রাখা হয়। গত বছরের এপ্রিল থেকে তিনি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*