প্রধান মেনু

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নামে প্যাড ছাপিয়ে রোগীদের প্রেসক্রিপশন দেয়া হতো

ওষুধের দোকানের কর্মচারী এমবিবিএস ডাক্তার সেজে দেখেন রোগী!

আলোরকোল ডেস্ক ।।

এইচএসসি পাস করে একটি ওষুধের দোকানে চাকরি করতেন মোস্তাক আহমেদ করিম। পরে চাকরি ছেড়ে শুরু করেন ফার্নিচার ব্যবসা। সফল হতে না পেরে পানি বোতলজাত করে পাড়া মহল্লার দোকানে নিজেই সরবরাহ করেন।

কিন্তু পানি ব্যবসাও আলোর মুখ দেখছে না। তাই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পানি সরবরাহ করে বিকেলে কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসে এমবিবিএস ডাক্তার সেজে রোগী দেখেন তিনি। ফি নেন দুইশ টাকা।

সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় হক সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় নিউ মুক্তি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসে রোগী দেখার সময় সোমবার রাত ৯টার দিকে ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার মোস্তাক আহমেদ করিমকে আটক করে র‌্যাব-১১।

অভিযানের সময় পাঁচজন রোগী উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে দুজন ছিলেন পুরোনো রোগী। তারা আসছেন ডাক্তারের দেওয়া এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে।

ধৃত করিম কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার সালেহাকান্দি এলাকার মৃত রহিম মণ্ডলের ছেলে। ভাড়া বাসায় থাকেন ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায়।

এছাড়া করিম সিদ্ধিরগঞ্জের হীরাঝিলে হাজী রজ্জব আলী সুপার মার্কেটে একটি ভুয়া কারখানা গড়ে তুলে পানি ব্যবসা করেন। নলকূপের পানি বোতলে ভরে মিনারেল বলে বিক্রি করেন করিম।

নিজের দোষ স্বীকার করে ভুয়া ডাক্তার করিম জানান, তিনি ডাক্তার না।

নামের সঙ্গে মিল থাকা সরকারি নিবন্ধনকৃত (২৬৬৩৩ নং) ডাক্তার মো. মোস্তাক আহমেদের কোড ব্যবহার করে নিজেকে এমবিবিএস (ডি-অর্থো), পিজিটি (ডি-অর্থো), পিজিটি (হৃদরোগ), চিফ মেডিকেল অফিসার, হাড়জোড়া, বাত ব্যথা, মেরুদণ্ড বিশেষজ্ঞ বলে পরিচয় দেন করিম।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নামে প্যাড ছাপিয়ে রোগীদের প্রেসক্রিপশন দিয়ে বিগত ১৫ বছর ধরে ডাক্তার সেজে রোগী দেখে আসছেন। বসেন বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

এমন কাজ আর জীবনে করবে না- দুই কান ধরে কথা দিয়ে তাকে আটক না করে অর্থ জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়ার জন্য র‌্যাব কর্মকর্তাদের অনুরোধও করেন এই ভুয়া ডাক্তার।

সিদ্ধিরগঞ্জের আটি ভূমিপল্লীর আবদুল আলীম ও পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকার শাহজালাল জানান, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের প্রলোভনে পড়ে ভালো ডাক্তার মনে করেই মোস্তাক আহমেদ করিমের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন।

তারা বলেন, প্রথম দিনে কিছু ওষুধ আর কয়েকটি পরীক্ষা দিয়েছিল। সেই সব পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে আবার ডাক্তারকে দেখাতে তারা এসেছেন। রিপোর্ট দেখানোর আগেই র‌্যাব অভিযান চালায়।র‌্যাব-১১ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারিতে নিশ্চিত হয়ে নিউ মুক্তি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হয়। এক সময়ের ফার্নিচার ব্যবসায়ী এইচএসসি পাস ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার মোস্তাক আহমেদ করিমকে রোগী দেখার সময় হাতেনাতে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*