প্রধান মেনু

উপকূলের নিবন্ধিত জেলেরাও পাচ্ছে না সহয়তা

মোংলা প্রতিনিধি ।।

ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সরকারি নিষেধাজ্ঞায় মাছ ধরতে না পারায় চরম দুঃখ-কষ্টে দিনাতিপাত করছে মোংলার সুন্দরবন এবং সমুদ্র উপকূলের জেলেরা।

বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা না থাকায় তারা এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও তা খুবই সামান্য বলে জানিয়েছেন জেলেরা। বিষয়টি স্বীকারও করেছেন স্থানীয় সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এজেডএম তৌহিদুর রহমান।

জেলেদের অভিযোগ, উপজেলায় জেলে আছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার। এদের মধ্যে কেবল ৩৬২ জনকে সরকারি ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ‘জেলে কার্ড’ থাকলেও তারা ত্রাণ হিসেবে ভিজিএফের চাল পাননি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে মৎস্য কর্মকর্তাদের ভাষ্য, তারা নিবন্ধিত নন, তাই হয়তো চাল পাননি। এসব জেলেরা যাতে নিবন্ধিত হয় সে জন্য তাদের তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে।

সরেজমিন মোংলা উপজেলার সুন্দরবন উপকূলের চিলা, জয়মনি, চরকানা ও বুড়িরডাঙ্গা এলাকায় কথা হয় জেলে শংকর গাইন, আবু বকর, বিদ্যুৎ মন্ডল, লিয়াকত আলী, ইসমাইল সরদারসহ একাধিক কয়েকজন জেলের সঙ্গে। সুন্দরবন সংলগ্ন মোংলা ও পশুর নদীতে ইলিশ মাছ ধরেন এসব জেলেরা।

তারা বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় জেলে আছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার। এদের মধ্যে প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে মাত্র ৩৬২ জনকে সরকারি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। সামান্য এ চাল দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে ২২ দিন চলবে?

মোংলা পৌর শহরের প্রধান মৎস্য বাজারের আড়ৎ মালিক দ্বীন ইসলাম বলেন, ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলেরা কষ্টে আছে। আমাদেরও ব্যবসা মন্দা।

উপজেলার চরকানার জেলে আবু বকর ও চিলা এলাকার শংকর গাইন বলেন, “আমাদের মতো কয়েক হাজার জেলেদের ‘জেলে কার্ড’ আছে কিন্তু আমরা কোনো ত্রাণ সহায়তাই পায়নি। বারো মাস নদীতে মাছ ধরে খাই, এখন কীভাবে সংসার চালাবো। খুবই কষ্টে আছি।”

জানতে চাইলে মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এজেডএম তৌহিদুর রহমান বলেন, উপজেলায় ছয় হাজার পাঁচশ জেলে নিবন্ধিত আছেন। এদের মধ্যে ৩৬২ জন জেলেকে ভিজিএফের মাধ্যমে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।

বাকি জেলেদের পর্যায়ক্রমে ভিজিএফের আওতায় এনে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।

এদিকে জেলেদের ২২ দিনের জন্য ২০ কেজি চাল খুবই সামান্য স্বীকার করে এই মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, জেলেদের জন্য চাল বেশি বরাদ্দ এবং একাধিকবার যেন এই চাল দেওয়া হয়, সেজন্য সরকারের কাছে সে প্রস্তাব করা হয়েছে।

গত ৯ অক্টোবর থেকে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ২২ দিন বন্ধ আছে নদী ও সাগরে ইলিশ আহরণ ও বিক্রি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে তা কঠোরভাবে পালন করা হচ্ছে।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরলে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড কিংবা উভয়দণ্ড হতে পারে।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*