‘ইসলাম ধর্ম ও শিশু অধিকার’ শীর্ষক নতুন এ ধারাবাহিকে ইসলাম ধর্মে শিশু অধিকার পর্যালোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালা নিয়ে আলোচনার প্রয়াস পাব।
ভূপৃষ্ঠে নিষ্পাপ মানুষ বলতে আমরা শিশুদেরকেই চিনি। কিন্তু এই শিশুরাই সমাজে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শিশুরা হচ্ছে সমাজের সবচেয়ে দুর্বল অংশ। বড়দের নানা সমস্যা ও সংকটের প্রভাব সরাসরি শিশুদের ওপর পড়ে। এসব সমস্যা মেনে নেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো পথ থাকে না। তবে সব ধর্ম ও সংস্কৃতিতেই শিশুর জন্ম আনন্দদায়ক ঘটনা।
নানা সমাজে শিশুকে নানাভাবে স্বাগত জানানো হয়। শিশুর জন্মের পর মুসলমানরা ধর্মীয় অনুষ্ঠান আকিকা পালন করে। সদ্যপ্রসূত শিশুর মঙ্গলের জন্য গরু বা ছাগল জবাই করার রেওয়াজও রয়েছে। হিন্দুদের মধ্যে সামাজিক প্রথা অন্নপ্রাশন পালন করা হয়। এর বাইরেও নানা উপায়ে শিশুর জন্মকে উদযাপন করা হয়। তবে একজন মানবসন্তান ঠিক কখন থেকে শিশু হিসেবে গণ্য হবে এবং কোন বয়স পর্যন্ত শিশুর মর্যাদা পাবে তা নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে।
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের এক নম্বর অনুচ্ছেদে ১৮ বছরের নীচে সব মানবসন্তানকে শিশু হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তবে যেকোনো দেশের অভ্যন্তরীণ আইনকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো দেশের আইনে আরও কম বয়সকে শিশু বয়সের শেষ সীমা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে তাহলে সেটাকেও মেনে নেয় জাতিসংঘ। ১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘শিশু অধিকার সনদ’ গৃহীত হয়। এটি ১৯৫৯ সালে গৃহীত ১০টি অধিকার বা ধারা পরিমার্জন ও পরিবর্ধন হয়ে ১৯৮৯ সালে বিশেষ ৪টি মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে ৫৪টি ধারা সংবলিত এই ‘শিশু অধিকার সনদ’ গৃহীত হয়েছে।