মফস্বল সংবাদিকদের দুঃখ গাথা নিয়ে প্রকাশিত উপন্যাস ‘খবরের ফেরিওয়ালা’
প্রদীপ মন্ডল, চিতলমারী ।।
মফস্বল শব্দ দিয়ে প্রথমেই অবহেলা করা হয় জেলা, উপজেলা পর্যায়ের সংবাদকর্মীদের। সংবাদ, তথ্যের পেছনে যারা জীবনের মূল্যবান সময় অতিবাহিত করেন- সেই সংবাদকর্মীদের অব্যক্ত জীবনের বাস্তব গল্প তুলে ধরা হয়েছে ‘খবরের ফেরিওয়ালা’ উপন্যাসে।
রয়েছে সমাজের অসঙ্গতির চিত্র। প্রকাশিত হয়েছে ঢাকা বই মেলায়।
‘সাংবাদিকতার আদর্শিক পথ লালন-পালন করেন শিমুল ভাই। তার চটির ক্ষয়ে যাওয়া তলাটা স্পর্শ করে রাস্তা। গায়ের চেক শার্টটা একরঙা হয়ে গেছে। প্যান্ট সেলাইয়ের সুতার গিঁটগুলো ফাঁকা হয়ে আছে। তবুও তিনি আপোষহীন। তার ছেলের স্কুলের মাইনে বাকি পড়ে থাকে। স্কুলড্রেস না হলে ক্লাসে ঢুকতে নিষেধ করেছেন শিক্ষকরা। শিমুলের স্ত্রী অভিযোগের সুওে স্বামীকে বলেন, ‘সারাদিন টো টো করে ঘুরে বেড়াও সংসারটা তো গোল্লায় যেতে বসেছে!’ বইয়ের কাহিনীতে সত্য ও অসত্যের দোলাচলে সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের বাস্তব জীবনের কথা গল্পাকারে এগিয়ে চলে।
চিতলমারী শেরে বাংলা ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক সুরঞ্জন দেবনাথ বলেন, যুক্তিবিদ লেখক আরজ আলী মাতুব্বর যেমন প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ চুকাতে পারেননি, তেমনি অবস্থা পংকজ মÐলের। তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করতে পারেননি। অথচ তার লেখনিতে চারণ সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিনের মত গ্রামীণ সমাজের নানা দুর্দশা, অসংগতি ও সফলতার চিত্র তুলে ধরেছেন। জীবিকার প্রয়োজনে পংকজ একদিকে কাঠশিল্পে কঠোর পরিশ্রম করেছেন, অন্যদিকে সাহিত্য চর্চা করছেন নতুন ধারায়। এই বইয়ে জীবনের নানা টানাপড়েন আর সংঘাতময় জীবনের গল্প উঠে এসেছে।
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ও চিতলমারী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি পংকজ মন্ডল এই উপন্যাসটি লিখেছেন। তিনি জানান, অর্থ ও পেশি শক্তির ভয়াল নাগপাশে প্রায় বাক্রুদ্ধ সময়েও আমরা বিশ্বাস করি ‘অসির চেয়ে মসি বড়।’
গ্রন্থিক প্রকাশন এটি প্রকাশ করেছে। ঢাকা বই মেলার ২১১নং স্টলে বইটি পাওয়া যাচ্ছে। দাম ১৮০ টাকা।