দিন দিন বঙ্গোপসাগরে হাঙ্গরের সংখ্যা কমছে
বঙ্গোপসাগরে আহরণ নিষিদ্ধ ৫ মন হাঙ্গরের শুটকি উদ্ধার করেছে বন বিভাগ
বাগেরহাট প্রতিনিধি ।।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে বঙ্গোপসাগরে আহরণ নিষিদ্ধ ৫ মন হাঙ্গরের শুটকি উদ্ধার করেছে ।
বাগেরহাট সদর দড়াটানা নদীর চরের হাঙরের শুটকি চাতল থেকে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এ্ই শুটকি গুলো উদ্ধার করে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ মাহমুদুল হাসান বলেন, শুটকি চাতালে হাঙরের সন্ধান জানতে পেরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের সদর রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক নুরুজ্জামানের নেতৃত্বে শুটকি চাতালে অভিযান চালানো হয়।
এসময় আনুমানিক ৫ মন হাঙরের শুটকি উদ্ধার করা হয়। তবে অভিযান চলাকালীন সময়ে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, অনেক জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা হাঙর ধরা নিষিদ্ধ চলমান আইন রয়েছে এ আইন সম্পর্কে জানেন না।
তাদেরকে সচেতন করার জন্য মাইকিংসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
তিনি বলেন, ডলফিন প্রকল্পের আওতায় ২ ডিসেম্বর থেকে সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগরে হাঙর, ডলফিনসহ আহরণ নিষিদ্ধ প্রাণী না ধরার জন্য দুবলার চর শুটকি পল্লীতে সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা করা হবে। এছাড়া যদি কোথাও হাঙরের শুটকি করে থাকে তাহলে সেখানে অভিযান চালানো হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলেরা বলেন, বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন মাছের নির্বিচারে হাঙর ধরছেন জেলেরা। সাগর থেকে ধরা এসব হাঙর বিভিন্ন মৎস্য আড়ৎ ও সুন্দরবনের শুটকি পল্লীতে বিক্রি হয় চড়া দামে। এগুলো শুটকি হয়ে চলে যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ক্ষেত্র বিশেষ যায় বিদেশেও। আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও চড়া দামের জন্য জেলেরা অন্যান্য মাছের সাথে হাঙর ধরছেন নির্বিচারে। যার কারণে দিন দিন বঙ্গোপসাগরে হাঙ্গরের সংখ্যা কমছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি নির্বিচারে হাঙর ধরলে একসময় বঙ্গোপসাগর থেকে হাঙর বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এসব হাঙরের শুটকি দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয় চড়া দামে। চিনসহ বিভিন্ন উন্নত রাষ্ট্রে হাঙরের পাখনার রয়েছে অত্যাধিক চাহিদা। অভিজাত হোটেলগুলোতে বেশিদামে হাঙরের পাখনা ক্রয় করা হয়।
মৎস্যজীবী সমিতির এক নেতা বলেন, বাগেরহাট কেভি বাজারে সামান্য কিছু কামোট বিক্রি হয়। মূলত হাঙ্গোরকে বাঁচাতে হলে সুন্দরবনের দূবলার চরে হাঙর শুকানো ও আহরণ বন্ধ করতে হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ আব্দুর রউফ বলেন, এই এলাকার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে হাঙর কম পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে অনেক বেশি হাঙ্গর পাওয়া যায়। ওইসব অঞ্চলে অনেক জেলে আছেন যারা শুধু হাঙ্গর ধরতেই সাগরে যায়। বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশী সীমানায় কি পরিমান হাঙ্গর রয়েছে তার কোন পরিসংখ্যান নেই। এই প্রজাতিকে রক্ষা করতে হলে সাগরের হাঙ্গরের উপর অধিক গবেষনা প্রয়োজন।