প্রধান মেনু

দৈনিক আমাদেরসময়‘র সাংবাদিক মিথুন মাহফুজের ইন্তেকাল

আলোরকোল ডেস্ক ।।

দৈনিক আমাদের সময়ের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মো. মাহফুজুর রহমান (মিথুন মাহফুজ) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল শনিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫২ বছর। তিনি স্ত্রী লতিফা ইয়াসমীন, ১০ মাসের কন্যা নম্রতা মাহফুজ নূরানী এবং এক ভাই, দুই বোনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

মরহুমের ছোট ভাই রিপন জানিয়েছেন, মিথুন মাহফুজ কয়েক দিন ধরেই ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছিলেন। তার উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস ছিল। গতকাল শনিবার সকালে তিনি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পরই অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে দ্রুত বারডেম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ১০টা ২০ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পর্যবেক্ষণ শেষে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রাণোচ্ছল মিথুনকে হারিয়ে শোকে কাতর হয়ে পড়েন সহকর্মীরা। বারডেম হাসপাতালে ছুটে যান গণমাধ্যমকর্মীরা। এর পর হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ কর্মস্থল তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে দৈনিক আমাদের সময় কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন আমাদের সময়ের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ারসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী।

এ সময় মিথুন মাহফুজের ভগ্নিপতি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আকবর হোসেনসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এর পর নতুন ভিশন লিমিটেড ও আমাদের সময় পরিবারের পক্ষ থেকে গোলাম সারওয়ারের নেতৃত্বে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) প্রাঙ্গণে। এতে জাতীয় প্রেসক্লাব, ডিআরইউ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক নেতা ও সদস্যরা অংশ নেন। জানাজার পর সাংবাদিক নেতারা মরদেহে ফুল দিয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানান। এর আগে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন উপস্থিত সাংবাদিকরা।

তারা বলেন- মিথুন মাহফুজ হাস্যোজ্জ্বল, বিনয়ী ও সক্রিয় সাংবাদিক ছিলেন। তিনি কাজের মধ্যে ডুবে থাকতেই বেশি ভালোবাসতেন। তাকে কখনো কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে দেখা যায়নি। এ সময় বক্তারা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। সেখান থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর উত্তরায় তার বোনের বাসভবনে। ভগ্নিপতি আকবর হোসেন জানান, রাতেই জন্মভূমি খুলনার পাইকগাছায় মিথুন মাহফুজের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে। পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাবা-মায়ের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি।

মিথুন মাহফুজের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ইউনিক গ্রুপ ও নতুন ভিশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহা. নূর আলী। এ ছাড়া দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার প্রকাশক এসএম বকস কল্লোল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ার, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, উপসম্পাদক দীপঙ্কর লাহিড়ীসহ জাতীয় প্রেসক্লাব, ডিআরইউ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, খুলনা বিভাগীয় সাংবাদিক সমিতি ও জার্নালিস্ট ফোরাম অন মাইগ্রেশনের (জেএফএম) পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে।

সাংবাদিক মিথুন মাহফুজের বাবা মো. নূর আলী খুলনার পাইকগাছা সরকারি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ছিলেন। মা লতিফা খানম রানী ছিলেন একই কলেজের অধ্যাপক। মিথুন মাহফুজ পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৭ সালে খুলনায় দৈনিক অনির্বাণ পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু। এর পর দৈনিক পূর্বাঞ্চলে পাইকগাছা প্রতিনিধি ও স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে দৈনিক আমাদের সময়ে যোগ দেন নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে। একই প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত অবস্থায় মারা যান। তিনি খাদ্য, জনশক্তি, শ্রম, কৃষি ও পরিবেশবিষয়ক বিটে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। জেএফএমে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মিথুন মাহফুজ।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*