প্রধান মেনু

একজন সাদা মনের শিক্ষাগুরুর জীবন কথা

রফিকুল ইসলাম সুজন।।

 সফলতা এক সোনার হরিনের নাম। এই সোনার হরিন ধরতে মানুষের কতনা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা। আজীবনের লালিত স্বপ্ন সফলতা। কিন্তু সিংহভাগ মানুষের কাছেই সফলতা অ-ধরা আর স্বপ্নই থেকে যায়। কারন সফলতার পূর্বশর্ত যে বড়ই কঠিন, সফলতার পথ যে বড়ই কণ্টকাকীর্ণ ও বন্ধুর।


আজ বলবো একজন সফল ও গুনী মানুষের গল্প যিনি কণ্টকাকীর্ণ ও বন্ধুর পথের সমস্ত রসদ সংগ্রহ করে সফলতাকে আলিঙ্গন করে তাঁর অমিয় সুধা পান করেছেন। নাম তাঁর জনাব মোস্তফা জামান খান। তাঁকে সফলতার মূর্ত প্রতিক বললেও অত্যুক্তি হবে না।
জন্ম তাঁর মোরেলগঞ্জ থানাধীন ১৬ নং খাউলিয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামে, ডাকঘরঃ সন্ন্যাসী। পিতা-আবু ছাদেক খান (মরহুম) ও মাতা- রাবেয়া খাতুনে (মরহুমা) যাঁদের কোলজুড়ে প্রথম সন্তান হিসাবে আনন্দের হিল্লোল নিয়ে তাঁর জন্ম। তাঁরা তাকে আদর করেন “মহারাজ” বলে ডাকতেন। তাঁরা হয়তো বুঝতে পেরেছিল তাদের এই প্রতিভাধর ছেলেটি একদিন “সন্মান ও সফলতার রাজ্যে” অসামান্য রাজত্ব করবে।
পিতা আবু ছাদেক খান পেশায় একজন ব্যবসায়ী হলেও সামাজিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁর সরব উপস্থিতি ছিল। দূরন্ত জামানের বাল্যকাল কাটে প্রকৃতির নির্মল পরিবেশ আর বিশুদ্ধ ও স্নিগ্ধ বাতাসে। নদীবিধৌত উপকূলীয় এলাকায় প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দূর্যোগ, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস আর জলের সাথে যুদ্ধ ও সংগ্রাম করে করে বড় হতে থাকা দূরন্ত জামান যেন আগামী দিনের কঠিন জীবন সংগ্রামে জয়ী হওয়ার প্রস্তুতি গ্রহন করতে থাকেন বাল্যকাল থেকেই।
বর্ণাঢ্য শিক্ষাজীবনের প্রাথমিক শিক্ষা কাটে নিজ বাড়ির নিকটস্থ এস পি রশিদিয়া (সন্ন্যাসী) জুনিয়র হাই স্কুলে। ১৯৭১ ইং সালে এসি লাহা হাই স্কুল মোরেলগঞ্জ থেকে এসএসসি। এইচএসসি এর জন্য পাড়ি জমান সরকারি বিএল কলেজ খুলনায়। পিসি কলেজ বাগেরহাট থেকে বিএসসি। টিচার্স ট্রেনিং কলেজ খুলনা থেকে বিএড এবং কর্মজীবনে শত ব্যস্ততার মাঝেও দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবন তাঁর অনেক বৈচিত্র্যময়। আর সে জীবনের বাঁকে বাঁকে অগনিত সফলতার গল্প বোনা। এক নজরে তাঁর সুদীর্ঘ ৩৮ বছরের শিক্ষকতাকাল তুলে ধরা হলো।
#১৯৭৯-১৯৮১:সহকারি শিক্ষক,এসপি রশিদিয়ামাধ্যমিক বিদ্যালয়, সন্ন্যাসী।#১৯৮১-১৯৮৮:সহকারি শিক্ষক, সুন্দরবন মাধ্য: বিদ্যালয়, শরণখোলা।#১৯৮৮-১৯৯৯:সহকারি শিক্ষক রায়েন্দা  সরকারী পাইলট হাই স্কুল শরণখোলা।
#১৯৯৯-২০০৮:প্রধান শিক্ষক সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মঠবাড়িয়া।
#২০০৮-২০১৬: প্রধান শিক্ষক কে এম লতীফ ইনস্টিটিউশন মঠবাড়িয়া।
একজন আদর্শ শিক্ষকের যাবতীয় গুনাবলী তিনি অর্জন করেছিলেন। তাঁর সফলতার যাত্রা মূলত সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। প্রয়াত প্রধান শিক্ষক আলী আকবর স্যারের বিদায়ের পর তিনি শক্ত হাতে হালই ধরেননি শুধু বরং প্রতিষ্ঠান হিসাবে সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়েকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। ২০০৪ ইং সালে প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন তিনি উপজেলা ও জেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন। এর আগেও ১৯৯৫ ইং সালে রায়েন্দা  সরকারী পাইলট স্কুলে থাকাকালীন তিনি শরণখোলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হন।
ব্যক্তিগত প্রতিভা ও প্রতিষ্ঠান হিসাবে সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সফলতা তাঁকে পরবর্তীতে বৃহত্তর বরিশালের অন্যতম বিদ্যাপীঠ প্রায় শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী কে এম লতীফের প্রধান শিক্ষকের সন লাভের সুযোগ উন্মক্ত করে দেয়। চ্যালেঞ্জ গ্রহন ও সফলভাবে চ্যালেঞ্জ উত্তরনের মধ্যে তিনি আনন্দ খুঁজতেন। কে,এম লতীফের মত এত বড় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ছিল তাঁর জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। কিন্তু চ্যালেঞ্জ গ্রহনে যিনি আনন্দ পান তিনি কি কখনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পিছুপা হন? ছাত্রছাত্রীদের সাথে বন্ধুত্বসুলভ সুসম্পর্ক, সহযোদ্ধাদের সাথে পারস্পরিক বোঝাপড়া, ম্যানেজিং কমিটির সাথে সখ্যতা করে সব কিছুকে একই সুতায় বেঁধে নিয়ে সন্মুখ ভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি অত্র প্রতিষ্ঠানের স্বকীয়তাকে ও সুনামকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলেন।
তাঁর একান্ত ঐকান্তিক চেষ্টায় ২০১০ ইং সালে কে এম লতীফ জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।
দায়িত্ব সচেতন ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্বগুণ ও অত্র এলাকার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক বিবেচনায় তাকে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী কমিটি “বোর্ড কমিটি”র সদস্য করা হয় পরপর ২ টার্ম, অর্থাৎ ৬ বছর। একবার সরকার কর্তৃক মনোনীত আর একবার মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত।
বাংলা, ইংরেজী, অংক, বিজ্ঞান ও ধর্ম সহ সব বিষয়ে পান্ডিত্য তাঁকে ক্রিকেটীয় ভাষায় অল- রাউন্ডার শিক্ষকের মর্যাদা এনে দিয়েছিল। মিষ্টি হাঁসি ও স্বল্পভাষী তাঁর ব্যক্তি চরিত্রের অন্যতম গুন। মুক্তার মালার মত ছন্দবদ্ধ কথা ও অনভিপ্রেত শব্দমুক্ত তাঁর কথোপকথন।

তিনি বহুবিধ সামাজিক ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা ও অগ্রভাগে থেকে সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নিজ এলকায় তাঁরই একজন প্রিয় ও পরোলোকগত শিক্ষকের নামে একটি সেবামূলক দাতব্য প্রতিষ্ঠান “শহীদ আমজাদ হোসেন ফাউন্ডেশন” এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন শিক্ষক মোস্তফা জামান খান।
নেতৃত্বগুন ছিল তাঁর সহজাত গুনাবলী। বাগেরহাট পিসি কলেজে অধ্যয়নকালীন তিনি নিজ উদ্দ্যোগে গড়ে তোলেন ছাত্র কল্যাণ সমিতি। এই সমিতির মাধ্যমে ছাত্রদের যাবতীয় সমস্যাবলী সমাধানে তিনি অগ্রনায়কের ভূমিকা পালন করেন। এরপর টিচার্স ট্রেনিং কলেজে অধ্যায়নকালীন ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটে সাহিত্য সম্পাদক নির্বাচিত হন।

স্কাউটিংএ তাঁর দখল ও অবদান তাকে সফলতায় এক নতুন মাত্রা যুক্ত করে।
১৯৭৮ সালে রোভার হিসেবে ১ম বাংলাদেশ রোভার মুটে ৭ টি ইভেন্টে পুরষ্কার লাভ। ১৯৮৯ সালে স্কাউট লিডার হিসেবে খুলনা আঞ্চলিক ইন্দাবায় (তদানিন্তন খুলনা ও বরিশাল বিভাগ একত্রে) চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার লাভ। স্কাউটিং এ বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ন্যাশনাল সার্টিফিকেট এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন।

শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আন্দোলনেও সব সময় সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন মঠবাড়িয়া উপজেলা শিক্ষা ট্রাস্ট (MUST) এর সেক্রেটারী। ২০০৩ থেকে ২০১০ পর্যন্ত উপজেলা শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারী এবং ২০১০ -২০১৬ বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি মঠবাড়িয়া উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। ২০১০ থেকে ২০১৩ : শিক্ষক সমিতি, বরিশাল আঞ্চলিক শাখার সহ সভাপতি। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় শিক্ষক সমিতির অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

শিক্ষা ট্রাস্ট (MUST) এর দায়িত্ব পালনকালে মঠবাড়ীয়ার সাপলেজায় এক নরপশু কর্তৃক “ইতি” নামক ৩য় শ্রেনীর ছাত্র ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে জামান স্যার গর্জে ওঠেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সমন্বয়ে ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন হয়েছিল যা মঠবাড়ীয়ার ইতিহাসে অভূতপূর্ব নজির সৃষ্টি করেছিল। একপর্যায়ে সেই নরপশুরদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে যা কার্যকর হওয়ার পথে।
কবিতা, আবৃত্তি, কিরাত, গান ও অভিনয়েও তিঁনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত ।

স্থানীয় অনেক পত্রিকায় তাঁর কবিতা ছাপা হয়েছে। ২০১৬ ইং সালে প্রকাশিত “মঠবাড়ীয়ার ইতিহাস “স্মারক গ্রন্থে তাঁর রচিত “গর্বিত মাঠবাড়ীয়া ” নামক কবিতাটি তাঁর রচিত অসংখ্য কবিতার মধ্যে অন্যতম। স্মারক গ্রন্থের ৩৩ নং পৃষ্ঠা হতে ৩৭ নং পৃষ্ঠা পর্যন্ত এই সুদীর্ঘ, সমৃদ্ধ ও মিত্রাক্ষরে সাজানো কবিতা ছাপানো হয়েছে।
বহুবিধ সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও সমাজের বিভিন্ন মানুষের সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত থেকেও সমাজের কোন কাঁদা কখনোই তাঁকে যেন এতটুকুন ছুঁতে পারেনি। দল মত নির্বিশেষ সব মানুষের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ন সম্পর্ক স্থাপনে তিনি ছিলেন অনন্য।
সব সফলতার উপরে একজন শিক্ষকের আসল সফলতা হলো তাঁর শ্রেণীকক্ষ। শ্রেণীকক্ষে একজন শিক্ষক কতটা ভালো সেটাই তাঁর সার্থকতা ও সফলতার অন্যতম মানদন্ড। তিনি শ্রোনীকক্ষকে করে তুলেছেন উপভোগ্য ও আনন্দঘন। শুধুমাত্র ভয় আর বেতের শাসন নয় বরং ভালোবাসা, মমত্ববোধ আর আদর সোহাগ দিয়েই পাঠদান ও পাঠ আদায় করতেন।

পড়াশুনাকে কোমলমতি ছাত্র- ছাত্রীদেরকাছে উপভোগ্য, বোধগম্য করার জন্য কত যে মজাদার গল্প, উপমা, উদাহরন দিতেন তার হিসাব কে রাখে! তিনি কতটা প্রিয় শিক্ষক ছিলেন তাঁর একটি প্রমান যখন তিনি সন্ন্যাসী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিদায় নিয়ে সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলে যাচ্ছিলেন। তখন লঞ্চঘাটে গগনবিদারী কান্নার রোল আর টার্মিনালে লঞ্চের কাঁচি পেঁচিয়ে লঞ্চ কিছুক্ষণ আটকে রেখেছিল কোমল শিক্ষার্থীরা। সেই অবেগঘন পরিবেশর কথা লিখে বোঝানো যাবে না, সেটা উপলব্ধির বিষয়। সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিদায়ের সময়ও শিক্ষার্থীরা জড় হয়েছিল ইউএনও অফিস অভিমুখে যাওয়ার জন্য স্যারকে যেতে দেওয়া যাবে না-এই দাবীতে।
ধর্মীয় অনুভূতিসম্পন্ন জামান স্যার ছাত্রদের নামাজী করতে সাফা ও কেএম এই দুটি স্কুলে ৩টি মসজিদ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
স্যারের কিছু ডায়লগ ছিল যা খুবই তাৎপর্যময় ও প্রণিধানযোগ্য। যেমনঃ ওয়ার্ণিং-লার্ণিং-টার্ণিং-আর্ণিং-বার্ণিং। এই ৫ টা শব্দ খুবই সম্পর্কযুক্ত। তিনি ছাত্রদের এই বলে প্রবোধ দিতেন যে, নিজেকে নিজে বারবার ওয়ার্ণিং (তাগিদ) দিতে থাকো এই বলে যে, লার্ণিং (শিক্ষা) এর উপর জীবনের টার্ণিং (গতিপথ) নির্ভর করে। প্রোপার লার্ণিং হলে টার্ণিং হবে ইতিবাচক অর্থাৎ আর্ণিং(ইনকাম) ভালো হবে। অন্যথায় টার্ণিং হবে বার্ণিং (পোড়া) এর দিকে। অর্থাৎ জীবনটা দগ্ধ হতে থাকবে বা জ্বলতে থাকবে। অতএব পড়াশুনায় মন দাও।
বহুমুখী গুনবালীর আধার জামান স্যার একজন সৎ, সাহসী, সময়ানুবর্তী, সৃজনশীল, সদালাপী, সহানুভূতিশীল, স্বল্পভাষী, সামাজিক, সময়জ্ঞান, সুবক্তা, সংস্কৃতিমনা, সুশাসন, ন্যায়-নিষ্ঠ, নন্দিত, নীতিবান,নিরঅহংকার, নির্ভীক, নিঃস্বার্থ, নিবেদিতপ্রান, নির্মোহ, নিষ্কলুষ, ন্যায়পরায়ন, মহৎ, মহানুভবতা, মৃদুভাষী, মুক্তচিন্তা, মেধাবী, মননশীল, মার্জিত, মনুষত্ববোধ, মেজাজের ভারসাম্যপূর্ন একজন মানুষ।
অনাড়ম্বর জীবন-যাপনকারী, সদা ধর্মপরায়ণ ও আপাদমস্তক একজন সুখী মানুষ স্যার। ব্যক্তিগত জীবন চার কন্যা সন্তানের জনক।
নিরন্তন বয়ে চলা সময় গড়াতে গড়াতে একদিন হাজির ২০১৬ ইং সালের ০৫ নভেম্বর। সময় জানিয়ে দিল এবার তোমার যাবার পালা। নতুন কাউকে ছেড়ে দিতে হবে তোমার স্থান। উহ্, সময় কত নির্মম আর কত নিষ্ঠুর! সুদীর্ঘ ৩৮ বছর মনে- প্রানে, হৃদয়ে- মননে যে মানুষটি শিক্ষকতাকে ধারন করেছিলেন তাঁকে আজ এতটুকুন ফুসরত দিতে চাইলো না।

সহস্র ছাত্রছাত্রীদের চোখের জল চর সহযোদ্ধাদের চাপা আর্তনাদ উপেক্ষা করে বিদায় নিতে হলো। কিন্তু স্যারের দেওয়ার এখনো যে বহু কিছু বাকি, তাঁর জ্ঞানসমুদ্রে এখনো অজস্র মনি মুক্তা যে অবশিষ্ট তাইতে আবার তা বিলিয়ে দিতে ছুটে চলা নতুন কোন ক্যাম্পাসে। কারন একজন আদর্শ যোদ্ধা কখনোই হাত গুটিয়ে বসে থাকে না। সমাজের ধরাবাঁধা নিয়ম তাঁকে অবসর দিলেও তিনি অবসর নিলেন না। বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত স্যারের এখনো প্রত্যহ কাটে ঢাকায় কোন এক ক্যম্পাসে।
সময়ের কাছে অসহায় হয়ে আমরা স্যারকে বিদায় দিয়েছি বটে কিন্তু লক্ষ ছাত্রের মনের মাঝে স্যার যে ভালোবাসার স্থায়ী পাকা বসতি গড়েছেন সেখানে তিনি আমরন ছবি হয়ে থাকবেন। নতশিরে হৃদয়ের সবটুকুন ভালোবাসা উজাড় করে আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ তুমি তাকে সুস্থতার সহিত দীর্ঘ নেক হায়াত দান করো। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি তিনি আমাদের অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করছেন। আল্লাহ তুমিও তাঁকে আলোর পথ, চির মহিমান্বিত জান্নাতের পথে পরিচালিত করো। আমীন।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*